সেতু ভেঙে সাত গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের বড়হর পাড়া খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুটি গত রোববার ভেঙে গেছেছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বড়হরপাড়া খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুটি পিকআপ ভ্যানসহ ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে গেছে। তবে কেউ হতাহত হননি। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের মধ্যে এ সেতুর অবস্থান। এলাকার মানুষের কাছে এটি সাধুর ব্রিজ নামেও পরিচিত। লোহার সেতুটি ভেঙে পড়ায় বড়হরপাড়া, মম্বিপাড়া, মিশ্রিপাড়া, পৌরগোজা, নতুনবাজারসহ সাতটি গ্রামের ১০ হাজার মানুষ চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন। কুয়াকাটায় আসা পর্যটকেরাও এ রাস্তা ব্যবহার করেন।

স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত রোববার বেলা ১১টার সময় ঢাকা থেকে আসা একটি ট্রাক মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। মালবোঝাই ট্রাকটি সেতুর মাঝামাঝি গেলে সেতুটি হঠাৎ ধসে পড়ে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এলাকার বাসিন্দা মো. আবুল বাশার বলেন, পুরোনো সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে প্রায় দুই বছর আগে। তবু সংস্কার করা হয়নি। গত বছর সেতুটির কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। এরপর স্থানীয় মানুষেরা সেতুটি নতুন করে নির্মাণের দাবি জানান। এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া, নতুনবাজার, বড়হরপাড়া, পৌরগোজার লোকজন ও স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে। তা ছাড়া কুয়াকাটায় আসা পর্যটকেরা মিশ্রিপাড়া এলাকার বৌদ্ধমন্দির দেখতে যান এ সড়ক দিয়ে। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় তাঁরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা শুকদেব সৈদ্যাল বলেন, ‘এক বছর ধরেই আমরা এই ভাঙা সেতু পার হয়ে যাওয়া-আসা করি। তবে সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ার কারণে এখন যাতায়াতে অনেক সমস্যা হবে। চরম ভোগান্তিতে পড়বেন রোগীরা।’

গতকাল সোমবার দুপুরে ভেঙে পড়া সেতু দেখতে যান কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, সেতুটি অনেক দিনের পুরোনো, এর কারণে এটি ভেঙে পড়েছে। তাঁরা স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। এলাকার মানুষের ভোগান্তির কথাও তাঁদের জানিয়েছেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদিকুর রহমান, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) লতাচাপলী ইউনিয়ন দলনেতা মো. শফিকুল আলম, কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট এবং প্রস্থ ১০ ফুট।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ভেঙে পড়া সেতুটি দ্রুত অপসারণ করা হবে। তা ছাড়া ওই খালের ওপর একটি নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ স্থানীয় মানুষেরা যাতে চলাচল করতে পারেন, সে জন্য আপাতত ভেঙে পড়া সেতুর পাশেই একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হবে।