সরকারি চাকরিজীবী রাসেল আবারও বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের পদে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় ১০ বছর পর গঠিত যুবলীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রাসেল খান নামের এক সরকারি চাকরিজীবীকে। তিনি উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হিসেবে এক যুগ ধরে কর্মরত। এর আগেও যুবলীগের একই পদে ছিলেন রাসেল খান।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।
গত বৃহস্পতিবার যুবলীগের এই কমিটি গঠন করা হয়। এতে মো. রফিকুল ইসলামকে সভাপতি, মুখলেসুর রহমানকে সহসভাপতি এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল খানকে আবারও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। রাসেল খান বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচয় দেন।
যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। সে সময় সম্মেলনে সরকারি চাকরিজীবী রাসেল খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখন সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় রাসেল খানের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন পদবঞ্চিতরা। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।
উপজেলা যুবলীগের দুজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, চাকরির পাশাপাশি সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের দলীয় পদে থাকলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। যুবলীগ নেতা হয়েও তিনি নিয়মিত দাপ্তরিক কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারাও অনেকটা অসহায়।
অভিযোগের বিষয়ে রাসেল খান আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবারও সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের দোয়ায় রাজনীতি করে যাচ্ছি।’ সরকারি চাকরির পাশাপাশি রাজনীতি—দুটি কাজ কীভাবে একসঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন, প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে চাননি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমি শহরে আসছি। এক ঘণ্টার মধ্যে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।’ এই বলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের যুবলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবী কেউ যদি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চান, তবে সেখানে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে সরকারি দপ্তরের কোনো বিধিনিষেধ আছে কি না, সেটি আমার জানা নেই।’
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি চাকরি করে সরাসরি রাজনীতির কোনো পদপদবিতে থাকা যায় না। তাঁর (রাসেল খান) বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’