নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন করে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকসংকট দূর করার দাবিতে ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এ কর্মসূচি শুরু করেন। এ পরিস্থিতিতে আজ বিভাগটির পূর্বনির্ধারিত ‘ক্লাস টেস্ট’ পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সূত্রে জানা গেছে, সমাজকর্ম বিভাগের শ্রেণিকক্ষের সংকট দীর্ঘদিনের। বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের কাছে দফায় দফায় ধরনা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। আবার বিভাগের শিক্ষকেরাও বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেও কোনো ফল পাননি। এ কারণে শিক্ষকদের না জানিয়েই আজ সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের এ সময় তাঁদের দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায়।

আন্দোলনরত তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভাগের তিন ব্যাচে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৫০। ওই বিভাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ভবনের পঞ্চম তলার একটি কক্ষকে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই এক কক্ষেই তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই শিক্ষার্থীরা বলেন, শ্রেণিকক্ষসংকটের কারণে ঠিকমতো ক্লাস করা যায় না। পরীক্ষাগুলোও যথাসময়ে দেওয়া সম্ভব হয় না। এর মধ্যে আবার নতুন আরেকটি ব্যাচের ভর্তিপ্রক্রিয়া চলছে। নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলে সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠবে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, শ্রেণিকক্ষসংকটের পাশাপাশি বিভাগের শিক্ষকের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। তিনটি ব্যাচের জন্য সাত থেকে আটজন শিক্ষক প্রয়োজন বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেখানে শিক্ষক আছেন চারজন। তাই জরুরি ভিত্তিতে বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

জানতে চাইলে সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান চয়ন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। শিক্ষার্থীরা তাঁকে এ বিষয়ে কিছু জানাননি। তবে বিভাগে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকসংকটের কথা তিনি স্বীকার করে বলেন, একটি শ্রেণিকক্ষ দিয়ে তিনটি ব্যাচের পাঠদান খুবই দুরূহ। এ ছাড়া মাত্র চারজন শিক্ষক দিয়ে বর্তমানে তিনটি ব্যাচের ক্লাস ঠিকমতো নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে আছেন। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি সম্পর্কে শুনেছেন। শ্রেণিকক্ষসংকট দূর করার জন্য সমাজকর্ম বিভাগসহ আরও কয়েকটি বিভাগের জন্য ইতিমধ্যে নির্মাণাধীন ভবনে (একাডেমিক ভবন-৩) কয়েকটি কক্ষ অস্থায়ীভাবে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। শিগগিরই ওই কক্ষগুলো শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে।