মাদক বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্ব, আড়াইহাজারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি

কামরুল হাসান ওরফে তুষার
ছবি: সংগৃহীক

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে গুলি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ ওই নেতার নাম কামরুল হাসান ওরফে তুষার। তিনি ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল প্রধান ওই হামলা করেন বলে কামরুল অভিযোগ করেছেন। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের তথ্যমতে, বালিয়াপাড়া জেলার অন্যতম মাদক বেচাকেনার স্থান। সোহেল প্রধান পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি।

এর আগে গত ২ অক্টোবর একই এলাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ওই ঘটনায় সোহেল প্রধানকে আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর সোহেল প্রধানের ব্যক্তিগত কার্যালয় ও বাড়িঘরে কয়েক দফা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় কামরুল হাসান নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন সোহেল প্রধান। এর মধ্যে গতকাল রাতে কামরুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।

গুলিবিদ্ধ কামরুল হাসান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়া নিয়ে সোহেলের সঙ্গে তাঁর পুরোনো বিরোধ চলমান। গতকাল রাতে তিনি ও তাঁর দুই অনুসারী স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে খিচুড়ি রান্না করছিলেন। তখন তিনটি মোটরসাইকেলে লোকজন নিয়ে ওই এলাকায় আসেন সোহেল। বিষয়টি জানতে পরে তিনি ও তাঁর অনুসারীরা পালানোর চেষ্টা করেন। তখন সোহেল ও তাঁর লোকজন পেছন থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে সাত থেকে আটটি গুলি ছোড়েন। একটি গুলি তাঁর পায়ে লাগে। গোলাগুলির শব্দ শুনে এলাকাবাসী বাইরে বেরিয়ে এলে সোহেল লোকজন নিয়ে পালিয়ে যান।

ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের কুড়িয়ে পাওয়া গুলির খোসা
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ সূত্র জানায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ও সোহেল প্রধান বালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় গতকাল গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ঘটনার সময় তাঁরা লোকজনসহ সোহেল প্রধানকে এলাকায় দেখেছেন। পরে তাঁরা বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শুনতে পান। আজ শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেন এলাকাবাসী।

মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে সোহেল প্রধানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ২৫ অক্টোবর নিজের বাড়িতে হামলার পর সোহেল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘একসময় আমি মাদকের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ইউপি সদস্য হওয়ার পর এলাকায় মাদক বেচাকেনা বন্ধ করে দিই। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে এবং আমার বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে। তারা আবার এলাকায় মাদক ব্যবসা শুরু করতে চায়।’

গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাসান উল্লাহ। তিনি বলেন, কামরুলের পায়ে গুলি লেগেছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর দেখা যায়, গুলি পা ভেদ করে বেরিয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।