সুন্দরবনে ফাঁদে আটকে ছটফট করছিল প্রাণীটি
ফাঁদে আটকে ছটফট করছিল প্রাণীটি। তাতে আরও শক্ত হয় পায়ে আটকে যাওয়া রশির বাঁধন। কেটে রক্ত পড়ছিল বাঁ পা দিয়ে। প্রাণীটির আর্তনাদে নীরবতা ভাঙে সুন্দরবনে। সেই চিৎকার ভেসে আসে বনকর্মীদের কানে। কাছে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, হরিণ শিকারের জন্য চোরাশিকারিদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়েছে একটি ছোট বানর। পরে বনকর্মীরা বানরটি ফাঁদ থেকে উদ্ধার করে শুশ্রূষা দিয়ে বনে অবমুক্ত করেন।
ঘটনাটি শনিবার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঘাগমারী এলাকার। রোববার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে হরিণ শিকারের সিটকা ফাঁদে আটকে গাছে ঝুলে থাকা ওই বানর এবং সেখান থেকে প্রাণীটি উদ্ধারের ছবি প্রকাশ করেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী।
বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম ফেসবুকে লেখেন, ‘আসলে গোটা সুন্দরবনে শিকারিরা হরিণ ধরতে গিয়ে শুধু হরিণই মারে না, মারে অন্য প্রাণীও। গত পাঁচ মাসে আমার কর্মকালে (সুন্দরবন পূর্ব) সহকর্মীরা যে পরিমাণ ফাঁদ অপসারণ করেছে, তা না করতে পারলে কত শত হরিণ এবং অন্যান্য প্রাণী যে শিকার হতো তার সীমা নেই! এটাই বাস্তব সত্য। আপনারা এসব প্রাণী হত্যাকারীকে সহায়তা না দিয়ে বা তাদের নিকট থেকে মাংস না কিনে বরং আমাদের কাছে তাদের সোপর্দ করুন দয়া করে। আপনার একটু সহযোগিতায় আমার আপনার প্রাণের সুন্দরবন বাঁচবে ইনশা আল্লাহ।’
আটকে পড়া বানরটির বিষয়ে ডিএফও রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সহকর্মীরা প্যারালাল লাইন সার্চিং পদ্ধতিতে ফুট প্যাট্রল করে হরিণ শিকারের জন্য পাতা ফাঁদে আটকে পড়া একটি বানর উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে বনে ছেড়ে দিয়েছে। আমরা প্রাণ বাঁচানোর কাজ করছি। তাই অনুরোধ করব, এসব প্রাণী হন্তারকদের সহায়তা করবেন না। যাঁরা হরিণের মাংস কেনেন বা শিকারিদের আশ্রয় দেন, তাঁরাও পরোক্ষভাবে এই অপরাধে জড়িত। আমরা সবাই সচেতন হলে রক্ষা পাবে এই অরণ্যের প্রাণ, রক্ষা পাবে আমাদের বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন।’