সাজেদার হাতে ফুল দিয়ে আ.লীগে যোগ দেওয়া ওয়াহিদুজ্জামান এখন শামা ওবায়েদের মঞ্চে

সালথায় ওলামা দলের সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঙ্গে মো. ওয়াহিদুজ্জামান (গোল চিহ্নিত) এক মঞ্চে দেখা গেছেছবি: সংগৃহীত

২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন মো. ওয়াহিদুজ্জামান। ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের তৎকালীন আওয়ামী লীগ-দলীয় সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে তখন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। গত সোমবার তাঁকে সালথায় ওলামা দলের এক সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গেছে।

গত সোমবার বিকেলে সালথা বাজার বাইপাস চৌরাস্তার মোড়ে ওই সভার আয়োজন করে উপজেলা ওলামা দল। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ। সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় ওয়াহিদুজ্জামান আগামী নির্বাচনে শামা ওবায়েদকে বাংলাদেশের সব আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে জেতানোর আহ্বানও জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওয়াহিদুজ্জামান (৪৬) সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১১ সালে ভাওয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একাংশের সমর্থনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন। এরপর তিনি ওই আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং তাঁর বড় ছেলে আয়মন আকবরের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। ওই সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট সালথায় একটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফুল দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের আওয়ামী লীগে যোগদান উপলক্ষে জনসভা’।

২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ওই সম্মেলনে নিজেকে ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী’ ঘোষণা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পোস্টারিং করেছিলেন তিনি। যদিও পরে ওই সম্মেলন স্থগিত করা হয়।

২০১৫ সালে সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন ওয়াহিদুজ্জামান
ফাইল ছবি

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ওয়াহিদুজ্জামান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছিলেন। সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়মন আকবরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁর সমর্থকদের হাতে পিটুনির শিকার হয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। এক জনসভায় সাজেদা চৌধুরী মঞ্চে থাকা অবস্থায় ঘটনাটি ঘটেছিল।

এ বিষয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে কখনো আওয়ামী লীগার হতে পারিনি। আবার আমি ২০১১ সালে ভাওয়াল ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তখনো দলে আমার অবস্থান ছিল কাগজে-কলমে।’ তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের মাধ্যমে তিনি অতীতে অনেক উপকৃত হয়েছেন। ২০০৯ সালে একটি হত্যা মামলায় কারারুদ্ধ হয়েছিলেন। তখন শামা ওবায়েদ তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। আবার ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শামা ওবায়েদের সমর্থনের কারণেই তিনি জয় পেয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি আওয়ামী লীগ বা বিএনপি করি না। নেতাও হতে চাই না। আমি শামা আপার সাথে আছি।’