গিনেস বুকে ১২ বার নাম লিখিয়েছেন মাগুরার মাহমুদুল

ফুটবল ফ্রি স্টাইল করে ২১ বছর বয়সেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ১২ বার নাম লিখিয়েছেন মাহমুদুল হাসান
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় মাহমুদুল হাসান ফয়সাল নামের এক তরুণ ক্রীড়া ক্ষেত্রে নিজের দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। ফুটবল ফ্রি স্টাইল করে ২১ বছর বয়সেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ১২ বার নাম লিখিয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ ‘দ্য মোস্ট বাস্কেটবল নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেস ইন থার্টি সেকেন্ডস’ ইভেন্টে রেকর্ড গড়ে বিশ্বদরবারে নিজের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম তুলে ধরেছেন মাগুরার এই তরুণ। গিনেস কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট বলছে, এই ইভেন্টে ৩০ সেকেন্ডে ২৯ বার ঘাড়ের ওপর বাস্কেটবল নাচিয়ে রেকর্ডটি নিজের দখলে নিয়েছেন। রেকর্ডটি ২০২১ সালের ১১ জুন হলেও এর স্বীকৃতি মাহমুদুল হাসান পেয়েছেন ২৮ জানুয়ারি।

মাহমুদুল হাসান বলেন, পাঁচবার ব্যর্থ হওয়ার পর ষষ্ঠবারে রেকর্ডটি নিজের দখলে নিতে পেরেছেন। এভাবেই গড়তে চান আরও অনেক রেকর্ড। মাহমুদুল এখন পর্যন্ত মোট আটটি ইভেন্টে রেকর্ড করেছেন। এর মধ্যে একটি ইভেন্টে তিনি নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন পাঁচবার। সে হিসেবে ওয়েবসাইটটিতে তাঁর নাম উঠেছে মোট ১২ বার।

এর আগে মাহমুদুল হাসান গিনেস বুকে যেসব রেকর্ড করেছেন, সেগুলো হচ্ছে দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন ওয়ান মিনিট (১৩৪ বার), দ্য মোস্ট বাস্কেটবল আর্ম রোলস ইন ওয়ান মিনিট (১৪৪ বার), দ্য মোস্ট বাস্কেটবল নেক ক্যাচেচ ইন ওয়ান মিনিট (৩৪ বার), দ্য মোস্ট ফুটবল নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেচ ইন ওয়ান মিনিট (৬৬ বার), দ্য মোস্ট রোলস এক্রোস দ্য ফোরহেড ইন থার্টি সেকেন্ডস (৪৬ বার), দ্য মোস্ট ফুটবল (সকার বল) নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেচ ইন থার্টি সেকেন্ডস (৩৬ বার)। এ ছাড়া দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন থার্টি সেকেন্ডস ইভেন্টে পাঁচবার রেকর্ড করেছেন তিনি। এই ইভেন্টে দুবার ৬২, একবার করে ৬৬, ৬৮ ও ৭৭ বার বল নাচিয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি। মাহমুদুল আটটির কথা বললেও গিনেস কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট বলছে, বাংলাদেশি এই ফুটবল ফ্রি স্টাইলারের দখলে আছে ৯টি গিনেস রেকর্ড। এটিকে ওয়েবসাইটে তথ্যগত বিভ্রাট বলেছেন মাহমুদুল।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের অর্জনের সঙ্গে মাহমুদুল হাসান
ছবি: সংগৃহীত

মাহমুদুল প্রথম রেকর্ডটি গড়েন ২০১৮ সালে। সেটি ছিল (দ্য মোস্ট ফুটবল আর্ম রোলস ইন ওয়ান মিনিট) এক মিনিটে সবচেয়ে বেশিবার বাহুর ওপরে ফুটবল ঘুরিয়ে (১৩৪ বার) রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান এই তরুণ। মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকাট্রনিকস বিভাগে ডিপ্লোমা প্রকৌশলে পড়া শেষ করে এখন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মাহমুদুল হাসান। তাঁর বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামে। বাবা সোহেল রানা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। মা মঞ্জুয়ারা খানম গৃহিণী।

১২ বারের মতো গিনেস বইয়ে নিজের নাম ওঠানোর পর মাহমুদুলের লক্ষ্য কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাবা–মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি প্রকৌশলী হব। সেটি শেষ করব। এর পাশাপাশি ফ্রি স্টাইল চালিয়ে যাব। কারণ, এটা আমার ভালো লাগে। এভাবে চলতে থাকলে আরও অনেক রেকর্ড আমার দখলে চলে আসেবে।’

শৈশবে মাহমুদুলের স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। প্রিয় খেলোয়াড় ছিল সাকিব আল হাসান। তবে পরিবারের সমর্থন না পেয়ে সে স্বপ্ন বেশি দূর এগোয়নি। মাহমুদুল বলেন, ‘যখন দেখলাম ক্রিকেটে বেশি দূর এগোতে পারছি না। তখনই ফ্রি স্টাইল শুরু করি, আমার বাসার ছোট বারান্দা থেকে। এক ডজন রেকর্ড করা সহজ ছিল না। শুরুতে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা অনুশীলন করতে হয়েছে। আমাদের দেশে ফ্রি স্টাইল তেমন জনপ্রিয় নয়, এ কারণে পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া কঠিন। তবে এখন ধীরে ধীরে এটা জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেকেই এখন ফ্রি স্টাইল করছে। এটা একটা ইতিবাচক ব্যাপার।’