পঞ্চগড়ে পৃথক স্থান থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, পুলিশ বলছে হত্যা

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ে নিখোঁজের পর পৃথক দুটি স্থান থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুজনই হত্যার শিকার হয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত দুজনের নাম টাবুল বর্মণ (৪৮) ও নূরুল ইসলাম (৪৫)। পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের ডোলোপাড়া এলাকার একটি আম বাগানে ড্রেনের মাটি খুঁড়ে কৃষক টাবুল বর্মনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাজ ঘুমটি এলাকার ভগিরাম বর্মনের ছেলে।

অপর দিকে জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের সাওতালের ঘাট এলাকায় করতোয়া নদী থেকে ইজিবাইকচালক নূরুল ইসলামের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নূরুল ইসলাম জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের মুসলিমপুর-কাউয়াখাল এলাকায় ইয়াসিন আলীর ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় টাবুল বর্মণ বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুজির পর বৃহস্পতিবার তাঁর ছোট ভাই পঞ্চগড় সদর থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর পর থেকেই টাবুল বর্মণের খোঁজে অভিযান শুরু করে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ললিতা রানী (৪০) নামে এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। পরে ওই নারীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের ডোলোপাড়া এলাকার একটি আম বাগানের ড্রেনের মাটি খুঁড়ে টাবুলের লাশ পাওয়া যায়। পরকীয়া সংক্রান্ত বিষয়ে টাবুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় টাবুল বর্মণের লাশ উদ্ধারে সক্ষম হয়েছি। হত্যার পর তাঁকে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া ও আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে শনিবার পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানাবেন।’

অপরদিকে পঞ্চগড়ের বোদা থানা পুলিশ জানায়, ২৭ জানুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে আর ফেরেননি চালক নূরুল ইসলাম। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরের দিন তাঁর স্ত্রী শেফালি বেগম বোদা থানায় একটি নিখোঁজের জিডি করেন। ওই দিনই দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় শালডাঙ্গা-দেবীডুবা সড়ক থেকে ইজিবাইকটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর গত ৩০ জানুয়ারি শেফালি বেগম বাদী হয়ে চার থেকে পাঁচজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইজিবাইক ছিনতাই ও অপহরণের অভিযোগে বোদা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মো. আলম (২৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর সাওতালের ঘাটে একটি লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। নূরুল ইসলামের পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, লাশ উদ্ধারের সময় নূরুল ইসলামের নাক-মুখ, দুই হাত গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল দুই পা। ধারণা করা হচ্ছে তাঁকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সুরতহালের সময় লাশের জ্যাকেটের পকেটে বেশ কিছু টাকা পাওয়া গেছে। ভিজে যাওয়ায় পুরো টাকা এখনো গণনা করা হয়নি। তবে এক লাখেরও বেশি টাকা হতে পারে। লাশের এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।