আশুগঞ্জ সার কারখানায় চুরি করার সময় সারবোঝাই ট্রাক জব্দ

জব্দ করা ট্রাক
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানার ভেতর থেকে চুরি করার সময় ইউরিয়া সার ও গ্যাসের সিলিন্ডারবোঝাই একটি ট্রাক জব্দ করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সারবোঝাই ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল পাঁচটার দিকে সার কারখানার ভেতর থেকে একটি ট্রাক জব্দ করে থানায় আনা হয়। ট্রাকটিতে ২৬ বস্তা সার ও চারটি সিলিন্ডার আছে। তবে সিলিন্ডারগুলো গ্যাসভর্তি কি না, এখনো পুলিশ জানে না। গত মঙ্গলবার সকালে একজন ট্রাকচালক কারখানা থেকে সার নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন নির্ধারিত পরিমাণের বেশি সার থাকায় ট্রাকটি জব্দ করা হয়। আজ বিকেলে খবর পেয়ে পুলিশ ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। ট্রাকের চালককে শনাক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সকালে মো. জামিল নামের এক ট্রাকচালক ইউরিয়া সার নিতে আশুগঞ্জ সার কারখানায় যান। একজন ডিলারের ৩০০ বস্তা ইউরিয়া সার নিতেই তিনি কারখানার গিয়েছিলেন। তিনি কারখানা থেকে ওই ডিলারের ৩০০ বস্তা ইউরিয়া সার বাইরে নিয়ে রাখেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি বাড়তি ২৬ বস্তা ইউরিয়া সার ও গ্যাসের ৪টি সিলিন্ডার নিয়ে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন কারখানার প্রধান ফটকে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে বলেন। কিন্তু ট্রাকচালক ওই মালামালের বিপরীতে কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। এ নিয়ে কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে ট্রাকচালকের কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ট্রাকচালকের সহযোগী আড়ালে গিয়ে ফটক খুলে দেন। তখন সার বোঝাই ওই ট্রাক নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন চালক।

কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকেরা জানান, নিরাপত্তাকর্মীরা পিছু নিয়ে কারখানা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে উপজেলার চরচারতলা এলাকা ট্রাকটি আটক করেন। সেখানে ট্রাক ফেলে চালক ও তাঁর সহযোগী পালিয়ে যান। পরে অন্য একজন চালক ট্রাকটি চালিয়ে কারখানার ভেতরে নিয়ে রাখেন। আজ বিকেলে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল চন্দ্র দাস কর্মকর্তা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নেতা-কর্মীদের সামনে ট্রাকে রাখা মালামাল যাচাই করে দেখেন। এ সময় আশুগঞ্জ থানা-পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মচারী বলেন, ভূঁইয়া ট্রান্সপোর্ট নামে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কামালের মাধ্যমে ৩০০ বস্তা সার নিয়েছিলেন ওই ট্রাকচালক। এরপর এ ঘটনা ঘটে। সপ্তাহখানেক আগেও কারখানায় সার চুরির ঘটনা ঘটেছিল।

আশুগঞ্জ সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কবীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ৩০০ বস্তা সার নেওয়ার পর ওই চালক আরও ২৬ বস্তা সার ট্রাকে ভরে নিতে চেয়েছিলেন। তখন ট্রাকটি আটক করা হয়।

আশুগঞ্জ সার কারখানার মহাপরিচালক (প্রশাসন) নিতাই চন্দ্র পাল এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, ‘এ বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। আরও অনেক বিষয় আছে। সব তদন্ত হচ্ছে। সশরীর অফিসে আসেন, তখন বিস্তারিত বলব।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে।