নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বললেন যুবলীগ সভাপতি

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম খোকন কাজী। বুধবার দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন খানকে দলে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম খোকন কাজী। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ সংবাদ সম্মেলন এই আখ্যা দেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম খোকন কাজী বলেন, ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পিরোজপুর জেলা যুবদলের নতুন কমিটির নেতারা ঢাকা থেকে সড়কপথে নাজিরপুর হয়ে পিরোজপুরে যাচ্ছিলেন। যুবদল নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নাজিরপুর পার হওয়ার সময় নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করে স্লোগান দেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা এর প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনার পরদিন একটি গণমাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ হোসেন খান যুবদলের পক্ষ নিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিপক্ষে মিথ্যা মনগড়া বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না।’

সংবাদ সম্মেলনে এম খোকন কাজী দাবি করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ হোসেন খান জাতীয় পার্টির শাসনামলে উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সময়ে তিনি পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে হয়রানি করেছেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি বিএনপির নেতাদের সঙ্গে সখ্য সৃষ্টি করে ব্যবসা করেন। পরে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে পদ বাগিয়ে নেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক এম এম নজরুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ্বাস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আল আমিন প্রমুখ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর জেলা যুবদলের নতুন কমিটির নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নাজিরপুর উপজেলার হাসপাতাল এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বাধার মুখে পড়ে। এ ঘটনাকে ‘হামলা’ উল্লেখ করে একটি গণমাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ হোসেন খান বক্তব্য দেন। তিনি যুবদলের ওপর হামলায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সমর্থিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের দায়ী করেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ আছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ হোসেন খান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের অনুসারী। অপর পক্ষে আছেন পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তাঁর অনুসারী হিসেবে আছেন উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।