আলোকচিত্রীর প্রচেষ্টায় প্রকৃতিতে ফিরল দুটি ডাহুকছানা

শিকারির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি ডাহুকের ছানা অবমুক্ত করা হয়েছে। আজ বিকেলে ভাড়াউড়া চা–বাগানের চম্পা লেকে
ছবি: প্রথম আলো

কাঁধে ক্যামেরা ঝুলিয়ে বন্য প্রাণীর ছবি তুলতে বের হয়েছিলেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আলোকচিত্রী কাজল হাজরা। পাখি কিংবা বন্য প্রাণীর ছবি তোলাই তাঁর নেশা। তবে আজ বুধবার ছবি তুলতে গিয়ে শিকারির কাছ থেকে দুটি ডাহুকের ছানা উদ্ধার করেছেন এই আলোকচিত্রী। পরে ডাহুকের ছানাগুলো অবমুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

আজ বিকেল পাঁচটার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা–বাগানের চম্পা লেকে এ ঘটনা ঘটেছে। কাজল হাজরার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে ডাহুকের ছানাগুলো চম্পা লেকের পাশেই ঘোরাঘুরি করছিল। এ সময় এক ব্যক্তি সেখানে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিলেন। কাজল সেখানে ছবি তুলতে যাওয়ার পরপরই একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে ওই ব্যক্তি বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন।

কাজল বলেন, ‘আমি তখনো জানতাম না মাছ রাখার ব্যাগে পাখির বাচ্চা আছে। আমি কৌতুহলবশত ব্যাগের ভেতরের মাছ দেখতে চাই। পরে ওই ব্যাগের ভেতর পাখির বাচ্চা দেখতে পাই। পাখির বাচ্চা ধরার কারণ জিজ্ঞেস করলে ওই লোক আমাকে বলেন, “বাচ্চাগুলো বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বড় করে খাব।” পরে আমি ওই লোককে পাখির বাচ্চাগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। একই সঙ্গে বন্য প্রাণী ধরা যে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, সেটিও তাঁকে জানাই। এতে ওই লোক তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। পরে ওই লোক পাখির বাচ্চাগুলো যেখান থেকে ধরেছেন, সেখানে ছেড়ে দেন। বাচ্চাগুলো অবমুক্ত করার ছবি ও ভিডিও আমি বন বিভাগকে পাঠিয়েছি।’

মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কাজল হাজরা ডাহুক পাখির ছানা উদ্ধারের পর অবমুক্ত করার ছবি ও ভিডিও তাঁকে পাঠিয়েছেন। শিকারি যে জায়গা থেকে পাখির ছানাগুলো ধরেছিলেন, সেখানেই ছানাগুলো অবমুক্ত করা হয়েছে। এটা সবচেয়ে ভালো কাজ হয়েছে। কারণ, এমনিতে মা ছাড়া পাখির ছানা বাঁচানো কঠিন। পাখির ছানাগুলো ওই স্থান থেকে সহজে তাদের মাকে খুঁজে পাবে। বন্য প্রাণী রক্ষায় কাজল হাজরার মতো সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।