চুরি হচ্ছে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের প্রাচীরের গ্রিলের রড, সাধারণ ডায়েরি

সীমানা প্রাচীরের গ্রিলের চুরি যাওয়া রডের স্থান ডিঙিয়ে ভেতরে এসে ঘাস কাটছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে
ছবি: প্রথম আলো

নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের পশ্চিম ও উত্তর দিকের নিরাপত্তাপ্রাচীরের ওপরের অংশের কয়েকটি স্থানের গ্রিলের রড কেটে নিয়ে গেছে চোরেরা।

এ ঘটনায় পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের কাস্টেডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম গতকাল মঙ্গলবার বদলগাছি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

বদলগাছি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নিতে পাহাড়পুর ফাঁড়ির পুলিশকে বলা হয়েছে।

বৌদ্ধবিহারের কাস্টেডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরাপত্তাপ্রাচীরের গ্রিলের রড নিয়ে যাওয়ায় বৌদ্ধবিহারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করেছি।’

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত পুরাকীর্তি এবং ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন। সপ্তম ও অষ্টম শতকের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতার সাক্ষী এটি। এখানে হাজার বছরের পুরোনো মহামূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ একটি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে। প্রতিদিন দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটকের পাশাপাশি মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এখানে আসেন।

এটি রক্ষায় ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বিহারের চারপাশে সীমানা ও নিরাপত্তাপ্রাচীর নির্মাণ করেছে। সম্প্রতি রাতের আঁধারে কে বা কারা একটু একটু করে বিহারের উত্তর ও পশ্চিম পাশের প্রাচীরের গ্রিলের ওপরের অংশ ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির পাশাপাশি বিহারের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।

আজ বুধবার দুপুরে বৌদ্ধবিহারে গিয়ে দেখা গেছে, মূল মন্দিরের পেছনের ও উত্তর পাশের নিরাপত্তাপ্রচীরের ১০-১২টি স্থানে গ্রিলের ওপরের অংশ থেকে কারা যেন ঝালাই আলগা করে রড খুলে নিয়ে গেছে। এসব স্থানে গ্রিলের ওপর দিয়ে স্থানীয় কেউ কেউ ভেতরে ঢুকে ঘাস কাটছেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় তিন মাস ধরে রাতে বিহারের নিরাপত্তাপ্রাচীরের ওপরের অংশের রড চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি এ চুরির প্রবণতা বেড়েছে। মাদকসেবীরা মাদকদ্রব্য সেবনের টাকা জোগাড় করতে গ্রিলের ওপরের অংশের ঝালাই নাড়িয়ে আলগা করে রড খুলে নিয়ে যায়। এ মাদকসেবীদের আটক করলে চুরির রহস্য বেরিয়ে আসবে।