মনপুরায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ

মনপুরা থেকে ভোলায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

ভোলার মনপুরা উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ডাকবাংলো চত্বরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা-ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত।

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মনপুরা থেকে ভোলায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ওরফে নয়ন এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় তিনি হামলা ও পুলিশের নীরব ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

নুরুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট বাজারে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আজ বিকেলে অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। মনপুরার এ আন্দোলন কর্মসূচিতে যোগদানের লক্ষ্যে নুরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও চরফ্যাশন উপজেলার নেতারা ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে আজ ভোরে মনপুরা আসেন। পরে তাঁরা ডাকবাংলোয় অবস্থান নেন। বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ডাকবাংলোর সামনে মহড়া ও স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ডাকবাংলোর মধ্যে ঢুকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মারধর করেন। এ সময় তাঁদের চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া চারটি মোটরসাইকেল ঘটনাস্থল থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিয়ে গেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

নুরুল ইসলামের ভাষ্য, হামলা চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ তাঁকে মনপুরা ত্যাগ করতে বলে। পরে পুলিশের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে তিনি পুলিশের সঙ্গে মনপুরা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।

নুরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা থাকলেও পুলিশের সামনেই যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে জখম করেন। এতে তিনিসহ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদার, জেলা আইনজীবী ফোরামের নির্বাহী সদস্য সালাউদ্দিন প্রিন্স, মনপুরা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সামসু মোল্লা, মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও সাবেক বিএনপি নেতা মো. জামাল উদ্দিন, যুবদল নেতা সবুজসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।

মনপুরা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদার বলেন, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে বানচাল করতে একই স্থানে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়ে হাসপাতাল অবরোধ করে রেখেছে। একদিকে বিএনপি-যুবদলের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে জখম করেছে, অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেয়নি।

তবে মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেলিনা আক্তার চৌধুরী বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিল—এটা তাঁরা জানেনই না। হামলার বিষয়েও তিনি কিছু জানেন না। তিনি শান্তি সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সাইদ প্রথম আলোকে বলেন, মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট বাজারে একই স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে বড় ধরনের সহিংসতা-সংঘাত থেকে বাঁচতে তাঁরা নুরুল ইসলামকে নিরাপদে পার করে দিয়েছেন। নুরুল ইসলাম যাওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। তবে পুলিশের সামনে কোনো হামলা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।