খোকসায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর

খোকসা উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। শনিবার রাতে খোকসা শহরে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার খোকসায় উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও একাধিক নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি ভাংচুর হয়েছে। গাড়িতে ইউএনও থাকলেও তিনি আহত হননি।

শনিবার বিকেল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোকসা শহরের বাজার এলাকায় দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে।

রাতে ইউএনও রিপন বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা থেকে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফেরার সময় ইটের আঘাত লেগে গাড়ির পেছনের গ্লাস ভেঙে যায়। তবে কেউ আহত হয়নি। গাড়িটি বর্তমানে থানায় রাখা আছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, থানায় মামলা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, শনিবার বিকেলে উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের হটুর মোড় এলাকায়  জানিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হবিবর রহমানের ছোট ভাই শরিফুল ইসলামকে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা পিটিয়ে জখম করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনার সূত্র ধরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী বাবুল আকতার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) মোতাহার হোসেন ওরফে খোকনের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় দুই প্রার্থীর সমর্থকেরা উভয়ের একাধিক নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের বহরে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়িতে ইট পড়ে পেছনের অংশের গ্লাস ভেঙে যায়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন।

মোতাহার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর একাধিক কর্মীর ওপর নৌকার প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বাবুল আকতার বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় তাঁর তিন-চার কর্মী আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা তাঁর অফিস ও সমর্থকদের দোকান ভাংচুর করেছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, খোকসায় নির্বাচন নিয়ে একটু উত্তেজনা চলছে। সন্ধ্যায় দুটি পক্ষ মুখোমুখি হয়। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা শুনেছি। পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।

পুলিশ সুপার খাইরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে খোকসা থানার ওসি ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। থানায় মামলা নেওয়া হচ্ছে।