‘আজকা রাতত থ্যাকে কম্বল গাওত দিয়ে আরামে ঘুমাবার পারমু’

আজ বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে খোতেজা বেওয়ার মতো শীর্তাত ২০০ জন নারী ও পুরুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের শহীদ ছমির উদ্দিন মণ্ডল স্মৃতি পার্কে কম্বল নিতে এসেছেন বৃদ্ধ খোতেজা বেওয়া (৮২)। খোতেজা বেওয়ার বাড়ি আক্কেলপুরের শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে। কম্বল পেয়ে খোতেজার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে খুব ঠান্ডা পড়িচে। তারপর নদীর পাড়েত বাড়ি। ধো-ধোয়া (কুয়াশা) বাতাসে আরও বেশি ঠান্ডা লাগে। নতুন ল্যাপ কিনবার চাছিনু, কিন্তু ল্যাপ কিনবার পারিনি। পুরাতন ল্যাপ গাওত দিয়ে থাকোচি। পুরাতন ল্যাপত দিয়ে ঠান্ডা কাটোচে না। আজকা রাতত থ্যাকে ল্যাপের সাথে কম্বল গাওত দিয়ে আরামে ঘুমাবার পারমু।’

আজ বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে খোতেজা বেওয়ার মতো শীর্তাত ২০০ জন নারী ও পুরুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আক্কেলপুর পৌর শহরের শহীদ ছমির উদ্দিন মণ্ডল স্মৃতি পার্কে এবং বেলা তিনটায় জয়পুরহাট শহরের সার্কিট হাউস মাঠে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়। জয়পুরহাট বন্ধুসভার সদস্যরা কম্বল বিতরণে সহযোগিতা করেন।

কম্বল পেয়ে খুশি শহরের মাদারগঞ্জ এলাকার ৯০ বছরের বৃদ্ধ ইসমাইল হোসেন
ছবি: প্রথম আলো

কম্বল নিতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে এসেছেন অনন্তপুর গ্রামের বৃদ্ধ লোকমান হোসেন (৭৮)। তিনি বলেন, ‘খুব ঠান্ডা বাপু। পাতলা সুইটার গাওত দিয়ে শীত কাটে না। মুই কম্বলের জন্নি পাঁচ কিলোমিটার দুরত থ্যাকি আছি। কম্বুল গাওত দিয়্যা উশুম পানু। আল্লাহ তোমকে ভালো করুক বাপু।’

শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের হালিমা বিবি বলেন, ‘মুই শীতত খুব কষ্ট করিচ্চু। কম্বল গাওত দিয়ে আরাম পানু। মুই রাতত কম্বল গাওত দিয়ে আরামে ঘুমান পারমু। আল্লাহ তোমাকেরে ভালো করুক।’
কয়া শোবলা গ্রামের রেনুকা বিবি (৫৫) বলেন, ‘মোর বাড়ি ১২ কিলোমিটার দুরত। মুই গরিব মানুষ শীতত কাপড় কিনা পারোনি। কম্বল প্যায়ে শীতত কষ্ট কমল। একন সকালে কম্বল গাওত দিয়ে সংসারের কাজ করার পারমু।’

জয়পুরহাট শহরের পাচুর চক এলাকার বাসিন্দা জোবেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নুহ আলম অসুস্থ। শীতত খুব কষ্ট করিচ্ছে। কম্বলটা আমার স্বামীক দিব। তোমাদের জন্য দোয়া করব।’
জয়পুরহাট শহরের মাদারগঞ্জ এলাকার ইসমাইল হোসেন (৯০) বলেন, ‘বুড়া মানুষ শীত সহ্য করা পারি না। কম্বলটা দিয়্যা তোমরা হামার উপকার করলেন।’

পৃথক দুটি স্থানে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর জয়পুরহাট প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম, জয়পুরহাট বন্ধুসভার সভাপতি নাজমুল হাসানসহ বন্ধুসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।