জামালপুরে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতিকে পেটালেন উপজেলা সভাপতি

নির্যাতনের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক সভাপতিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা শহরের মালিবাগ এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই নেতার নাম মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি নিলক্ষিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং স্থানীয় নিলক্ষিয়া আব্দুস ছালাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্বাক্ষর করতে রাজি না হওয়ায় জেলার নেতাদের সামনে তাঁকে মারধর করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

এদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে মারধর করার প্রতিবাদে নিলক্ষিয়া চৌরাস্তা মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁর অনুসারীরা। মিছিলটি নিলক্ষিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম স্লোগান দেন নেতা-কর্মীরা।

এ ঘটনার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মারধরের শিকার ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে কেন দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সাত দিনের মধ্যে তাঁর লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ওয়ার্ড শাখায় সম্মেলন হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন ছিল। সম্মেলনের পর সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে কমিটি ঘোষণার কথা ছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার কথা বলেন এবং ওই কমিটিতে তাঁকে স্বাক্ষর দিতে চাপ দেন। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সামনে প্রকাশ্যে মারধর করেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামও মারধর করেন।

সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জন্য জীবনটাই শেষ করে দিলাম। ৪০ বছর ধরে দল করি। আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় দলের শীর্ষ নেতার হাতে মারধরের শিকার হতে হলো। এর চেয়ে লজ্জার আর কষ্টের কী হতে পারে। এ ঘটনায় আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।’

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তাঁর ছোট ভাই নিলক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যাপক আশরাফ হোসেন তরফদার বলেন, ‘সম্মেলনের জন্য এখানে আছি। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়েছে। তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। কমিটি গঠনের সময় এসব হয়েই থাকে। তবে ওই সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। তাই মারধরের বিষয়টি আমি দেখিনি।’