কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

কবির ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি মো. রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় ‘স্বভাবকবি’খ্যাত রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি মো. রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে কুড়িগ্রাম শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নাগেশ্বরী থানা-পুলিশ।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার মো. রফিকুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

গত শনিবার সকালে নাগেশ্বরী উপজেলার গোদ্দারেরপাড় এলাকায় নিজ বাড়িতে রাধাপদ রায় হামলার শিকার হন। পাশের এলাকার দুই ভাই মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর রহমানের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ ওঠে। কবিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। এ ঘটনায় কবি রাধাপদ সরকারের ছেলে জুগল রায় গত রোববার রাতে অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেন।

হামলার শিকার কবি রাধাপদ রায় নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

কবির ছেলে জুগল রায় বলেন, ‘ছয় মাস আগে সামান্য কথা-কাটাকাটির জেরে আমার বৃদ্ধ বাবাকে রফিকুল যেভাবে মেরেছে, তার যেন সঠিক বিচার হয়, আমি সেই দাবি জানাচ্ছি।’

স্বজন, পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জুগল রায়ের বড় ভাই মাধব রায় ও নাগেশ্বরী পৌরসভার হাসেমবাজার এলাকার মিলন ঢাকায় একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে মিলন এলাকায় এসে দাবি করেন, তিনি মাধব রায়ের কাছে কাজের টাকা পাবেন। এ নিয়ে তিনি ছয় মাস আগে এলাকায় সালিস ডাকেন। সেখানে একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করা স্থানীয় শ্রমিকেরা উপস্থিত হন। ওই সালিসে হিসাবের খাতায় দেখা যায়, মিলন ৫০০ টাকা পাবেন। পরে সালিস বৈঠকের মাধ্যমেই তা ফেরত দেন রাধাপদ রায়। ওই সালিসে ভিতরবন্দ ইউনিয়নের কচুয়ারপাড় এলাকার কদুর রহমান এসে উপস্থিত হন। সেখানে ওই ৫০০ টাকা নিয়ে কদুর রহমান ও কবি রাধাপদ রায়ের স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। সে সময় কদুর রহমানের সঙ্গে রাধাপদও বিবাদে জড়ান, যা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরে কদুর রহমানের ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম এ ঘটনার প্রতিশোধ নেবেন বলে হুমকি দেন। এসব ঘটনার জেরেই শনিবার কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

জুগল রায় বলেন, ‘বাবা (কবি) আগের চেয়ে ভালো আছেন। তবে যখন তাঁর চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে বুকের ওপরে উঠে মারা হয়েছিল, সে সময় তিনি কোমরে ব্যথা পেয়েছিলেন। শারীরের অন্যান্য জায়গার ব্যথা কমলেও কোমরের ব্যথায় তিনি দাঁড়াতে পারছেন না।’ তিনি জানান, তাঁর বাবা এখনো নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন