জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ নিয়ে সংঘর্ষ, এসআইসহ আহত ২০

চাঁদপুর জেলার মানচিত্র

চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে জেলেদের চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই মকবুল হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে পুলিশ বাদী হয়ে ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা অসংখ্য ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হননি। অভিযান চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ইউনিয়নের সাড়ে চার হাজার কার্ডধারী জেলের মধ্যে চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। এ সময় চাল কম হওয়ায় ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৪০ থেকে ৫০ জেলেকে চাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ জন্য বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের নির্দেশে চাল বিতরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনা খার ছেলে জসিম খানের নেতৃত্বে সেখানে অন্য জেলেদের নিয়ে হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় হামলায় পুলিশের এসআই মকবুল হোসেনসহ আরও পাঁচ সদস্য আহত হন। এরপর দুই পক্ষের কয়েক দফা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে সেখানে চাল বিতরণের অনিয়ম নিয়ে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘রাতে আমাদের কোনো ট্যাগ অফিসারকে না জানিয়ে এ ধরনের চাল বিতরণ করা নিয়ে সেখানের বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ কারণে কিছু অনিয়মের অভিযোগে চেয়ারম্যানের লোকজনের সঙ্গে সাধারণ জেলেদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।’

এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মহসীন আলম বলেন, ‘হামলার ঘটনা শুনে সেখানে আমরা অতিরিক্ত পুলিশ পাঠাই। বাধ্য হয়ে ফাঁকা গুলি করি। এ সময় দেশি অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালালে আমাদের একজন এসআইসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে অন্য কেউ আহত আছে কি না, আমার জানা নেই।’

ওসি শেখ মহসীন আলম জানান, এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে পুলিশের এক এসআই বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি অসংখ্য। ঘটনার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।