নেত্রকোনায় ৩ মিনিট সড়কে গাড়ি চলেনি, হাঁটেননি কেউ

নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র

আজ ৮ ডিসেম্বর ৩ মিনিট স্তব্ধ ছিল নেত্রকোনা শহর। সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত শহরের রাস্তায় চলেনি কোনো যানবাহন, হাঁটেনি কোনো পথচারী। সকাল ১০টা ৪০ বাজার সঙ্গে সঙ্গে সবাই নিজেদের কাজ ফেলে রাস্তায় নেমে আসে। সড়কের যানবাহনগুলো চলাচল থামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। দোকানিরাও এ সময় নেমে আসেন রাস্তায়। তাঁরা শ্রদ্ধা জানান ১৭ বছর আগে নেত্রকোনা উদীচীতে বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের।

২০০৫ সালের এই দিনে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নেত্রকোনা জেলা সংসদ কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলা করে জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ওই বোমা হামলায় নিহত হন আটজন। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে প্রতিবছর ৮ ডিসেম্বর শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নেত্রকোনা ট্র্যাজেডি দিবস পালন করে আসছে।

দিনটি উপলক্ষে আজ সকাল সোয়া নয়টায় শহরের অজহর রোড এলাকায় উদীচী কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। পরে ট্র্যাজেডি দিবস পালন কমিটির আহ্বায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সাইফুল্লাহ এমরানের সঞ্চালনায় সাড়ে নয়টায় উদীচী ট্র্যাজেডি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসিত সরকার, পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম খান ও সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান।

সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ৩ মিনিট স্তব্ধ নেত্রকোনা পালন শেষে ছোট বাজার এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মানববন্ধন ও প্রতিবাদী মিছিল বের হয়ে প্রধান সড়ক ঘুরে উদীচী কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

উদীচী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের এই দিনে সকালে শহরের অজহর রোড এলাকায় উদীচী কার্যালয়ের সামনে চলছিল ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজনের মহড়া। এ সময় বোমা হামলায় প্রাণ হারান আটজন। আহত হন অর্ধশতাধিক। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় দুটি মামলা করে। দুটি মামলারই রায় হয়েছে।