পণ্য পরিবহনে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ ব্যবহারে আগ্রহী ভুটান

নীলফামারীতে চিলাহাটি–হলদিবাড়ী রেলপথ পরিদর্শনে ভুটান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা
ছবি: প্রথম আলো

নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ী হয়ে বর্তমানে চলাচল করছে আন্তর্দেশীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস। এ পথে ভারত থেকে চলাচল করছে পণ্যবাহী ট্রেন। এবার পণ্য পরিবহনে এই সংযোগপথ ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভুটান।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ভুটান সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল চিলাহাটি রেলপথ, স্টেশন ও লুপলাইন পরিদর্শন করে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পরামর্শক ফিরোজ আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে ১৭ সদস্যের এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ভুটানের পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান সেওয়াং লাহদান। এর আগে পশ্চিমাঞ্চল রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে চিলাহাটি রেলস্টেশনের অতিথিশালায় প্রতিনিধিদলের আলোচনা সভা হয়।

আরও পড়ুন

পরিদর্শন শেষে ভুটান প্রতিনিধিদলের পক্ষে এডিবির পরামর্শক ফিরোজ আহমেদ বলেন, চিলাহাটি রেলস্টেশন ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটিশ আমল থেকে আসাম, শিলিগুড়ি, দার্জিলিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। ভুটানের যে পণ্য বাংলাদেশে আসে, সেটি এ পথে বহন করা যায় কি না, সেটি দেখতে এসেছেন তাঁরা। বাংলাদেশ সরকার এবং এডিবি তাঁদের সহযোগিতা করছে। এটি তাঁদের প্রাথমিক পরিদর্শন।

রেলপথটিকে সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে ফিরোজ আহমেদ বলেন, এটি আরও বাড়বে, যদি এ পথের (রেল) সঙ্গে স্থলবন্দর এবং পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন) চালু করা হয়।

প্রতিনিধিদলের সদস্য ভুটানের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহসভাপতি কমল প্রধান বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, দ্রুত ও কম সময়ের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ, মোংলা সমুদ্রবন্দর ও বুড়িমারী-চেংড়াবান্ধা স্থলবন্দরকে তাঁরা গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ জন্য ভারত ও বাংলাদেশের পথগুলো পরিদর্শনে এসেছেন। চিলাহাটি রুট চালু হলে দুই দেশের মধ্যে কম খরচে পণ্য পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের বাণিজ্যের একটা সম্ভাবনা আছে। তারা বাংলাদেশে পাথর রপ্তানি করে। ভুটানে প্রচুর ফল হয়, সে ফল তারা ভারত, বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বে রপ্তানি করেন। চিলাহাটি রুট ব্যবহারে তাঁদের মোংলা বন্দরের সঙ্গে দূরত্ব কমবে। এই বন্দর ব্যবহার করে স্বল্প খরচে বহির্বিশ্বে তাঁদের পণ্য পৌঁছাতে পারবেন। এই সম্ভাবনা সামনে রেখে তাঁরা মূলত অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা কেমন আছে, সেটি দেখার জন্য উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলটির আগমন। চিলাহাটির রেল অবকাঠামো এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তাঁরা সন্তুষ্ট বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর এক দিন আগে ওই প্রতিনিধিদল ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও ভারতের কোচবিহারের চেংড়াবান্ধা স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার চিলাহাটি পরিদর্শন শেষে বুড়িমারী হয়ে ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করে দলটি।