ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেনকে (৩৫) গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা নেওয়ার দাবিতে লাশ নিয়ে থানায় বিক্ষোভ করেছেন স্বজনেরা। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা থেকে তাঁরা থানা চত্বরে লাশ নিয়ে অবস্থান নেন। পরে রাত ১০টার দিকে মামলা গ্রহণের পর অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন স্বজনেরা।
এ ঘটনায় রাত সোয়া আটটার দিকে নিহত সাদ্দামের বাবা মোস্তফা কামাল ওরফে মস্তু মিয়া বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে সেটি এখনো মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। বাদী মোস্তাফা কামাল বলেন, ‘মামলার কপি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা থানা চত্বর ত্যাগ করব না।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদলের সাবেক ওই নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে হত্যা করেছেন। নিহত সাদ্দাম হোসেন সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য। তিনি শহরের কান্দিপাড়ার মাইমলহাটির মোস্তফা কামালের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দুটি মেয়ে আছে।
সাদ্দামের বাবা মোস্তফা কামাল বলেন, গতকাল রাত দেড়টার দিকে সাদ্দাম বাসায় ভাত খাচ্ছিলেন। তখন দেলোয়ার হোসেন, তাঁর সহযোগী পলাশ ও বাবুল মিয়া বাড়ি থেকে সাদ্দামকে ডেকে নিয়ে যান। রাত দুইটার দিকে সাদ্দামের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পান। কান্দিপাড়ার শংকর শাহবাড়ির পাশের খালপাড় নতুন সেতুর ওপরে গিয়ে দেখেন, দুজন সাদ্দামকে টানাহেঁচড়া করে তোলার চেষ্টা করছেন। তাঁকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে আজ সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে নিহত সাদ্দামের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর স্বজনেরা লাশ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দেলোয়ার হোসেনসহ জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। একপর্যায়ে তাঁরা লাশ নিয়ে সদর থানায় যান। থানা চত্বরে লাশ রেখে মামলা নেওয়ার দাবিতে অবস্থান নেন।
এ সময় থানার ফটকের বাইরে স্বজনদের পাশাপাশি এলাকাবাসী জড়ো হন। রাত সোয়া আটটার দিকে স্বজনেরা মামলার লিখিত এজাহার নিয়ে থানায় পৌঁছান। দ্রুত এজাহার মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে—ওসি এ আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা সাদ্দামের লাশ নিয়ে থানা চত্বর ত্যাগ করেন। ১৫ মিনিট পর তাঁরা আবার লাশ থানা চত্বরে এনে অবস্থান শুরু করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, তাঁরা মামলার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তবে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও স্বজনেরা এজাহার নিয়ে থানায় আসেননি। পরে এজাহার পেয়েছেন। এ নিয়ে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কোনো আটক নেই। গুলির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্র উদ্ধারসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।