ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার

সীতাকুণ্ডের অক্সিজেন কারখানাটিতে দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণের শঙ্কা নেই

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায়  সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে গতকাল শনিবার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ৬ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। অক্সিজেন কারখানাটিতে বিস্ফোরণের কারণ, উদ্ধার অভিযান ও ভবিষ্যৎ বিস্ফোরণের শঙ্কা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আবদুল হামিদ মিয়া’র সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অফিসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সুজন ঘোষ।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আবদুল হামিদ মিয়া
ছবি: প্রথম আলো
প্রশ্ন:

প্রথম আলো: অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের পর উদ্ধার অভিযানের সবশেষ পরিস্থিতি কী?

আবদুল হামিদ মিয়া: গতকাল শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছি। আজ রোববার ভোর থেকে আবার অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত জীবিত বা মৃত কাউকে পাইনি। যদি পাওয়া যায়, তা তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমকে জানানো হবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ আছেন, এ রকম দাবি কেউ করেননি। তারপরও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: এই কারখানায় গ্যাস  সিলিন্ডার যেখানে–সেখানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। এতে আবারও বিস্ফোরণের কোনো শঙ্কা আছে কি?

আবদুল হামিদ মিয়া: আমরা বিস্ফোরণ হওয়া কারখানা পরিদর্শন করেছি। কারখানার বিভিন্ন অংশ দীর্ঘক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেছি। এতে মনে হয়েছে, এই কারখানায় এই মুহূর্তে দ্বিতীয়বারের মতো বিস্ফোরণের কোনো আশঙ্কা নেই।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: প্ল্যান্টটিতে আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি ছিল কি? কারখানায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল কি না?

আবদুল হামিদ মিয়া: এখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাই এখন বোঝার উপায় নেই যে এখানে সিসি ক্যামেরা ছিল, কি ছিল না। তবে কারখানার বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র পড়ে থাকতে দেখেছি। কিন্তু দ্রুত বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বলা যায় নিমেষেই এই ঘটনা ঘটেছে। একবারই হয়েছে। দ্বিতীয়বার কোনো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। আসলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যতই থাক, এমন বিস্ফোরণের কারণে ওটার কোনো কার্যকারিতা নেই।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: এই প্ল্যান্ট কি ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়েছিল?

আবদুল হামিদ মিয়া: হ্যাঁ, আমি যতটুকু জানি কারখানার ফায়ার লাইসেন্স ছিল।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কারখানাটি যথাযথ গাইডলাইন কি মেনে ছিল?

আবদুল হামিদ মিয়া: এটা বিস্ফোরক পরিদপ্তর ভালো বলতে পারবে।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: বিস্ফোরণের কোনো কারণ চিহ্নিত করতে পেরেছেন আপনারা?

আবদুল হামিদ মিয়া: কী কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা তদন্তের পর বলা যাবে। এটি অক্সিজেন রিফুয়েলিং প্ল্যান্ট। সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের মূল প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ হয়েছে। প্ল্যান্টের কোন সিলিন্ডার বা কোন ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়েছে, তা এখনো চিহ্নিত করা যায়নি।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: এর আগে বিএম কনটেইনার ডিপোতেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। বছর না ঘুরতেই আবার সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাহলে কী বিএম ডিপোর ঘটনা থেকে কেউ শিক্ষা নিল না?

আবদুল হামিদ মিয়া: বিএম ডিপোর সঙ্গে এই প্ল্যান্টের ঘটনার ভিন্নতা রয়েছে। বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখানে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে। এটা ছিল তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের ঘটনা। এখানে কেউ মুখ খোলারও সুযোগ পাননি।