কলাপাড়ায় চাঁদা না পেয়ে প্রবাসী যুবককে মারধর, লাঞ্ছনা

আহত আশরাফুল আলম কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তোলাছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কুয়েতপ্রবাসী এক যুবক হামলায় আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে কলাপাড়া পৌরসভার মাদ্রাসা সড়ক এলাকায় তাঁর নিজ বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।  

আশরাফুল আলম (৩৬) ওই এলাকার শাহ আলম খানের ছেলে। তিনি কুয়েতে থাকেন। কিছুদিন আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। আহত আশরাফুলকে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, চাঁদা না পেয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা মো. আসাদুজ্জামান ও সহযোগীরা আশরাফুলের ওপর হামলা করেছেন। তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন।

আশরাফুলের বড় ভাই মোস্তফা জামান জানান, আশরাফুল আলম কয়েক বছর ধরে কুয়েতে বসবাস করছেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি গান করেন। কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন। কিছুদিন আগে তিনি ছুটিতে বাড়িতে আসেন। গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন তিনি। সেখানে থেকে আশরাফুল বাড়ি ফিরছিলেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে বাড়ির সামনে পৌঁছালে মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান ওরফে হিরণ ও তাঁর সহযোগীরা আশরাফুলের ওপর হামলা করেন। মূলত চাঁদা না দেওয়ার তাঁকে মারধর করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলাকারী ছিল ৭-৮ জন। তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। আশরাফুলকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা আশরাফুলের মুখে ও মাথায় মদ ঢেলে দেয়।

হামলায় আহত আশরাফুলকে প্রথমে কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মুমসাদ সায়েম জানান, তাঁর (আশরাফুল) চোখ, পেটসহ শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসা করা দরকার। এ জন্য তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই। ওরা আমাকে অকথ্য গালমন্দ করেছে। আমার সারা শরীরে মদ ঢেলে দিয়ে আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। আমার পকেট থেকে মুঠোফোনটাও নিয়ে গেছে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মো. আসাদুজ্জামান আজ শুক্রবার সকালে বলেন, ‘সে (আশরাফুল) আমাকে তাঁর বাসায় ডেকে নিয়েছিল। সে আমাকে আগে মেরেছে। এরপর আমাদের হাতাহাতি হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি।’

কলাপাড়া থানার উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং আশরাফুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। কেন এ ঘটনা ঘটেছে তা আমরা জানতে পারিনি।’