গৌরীপুরে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন। রোববার দুপুরে উপজেলার কলতাপাড়া বাজারেছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেছেন জয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা।

আজ রোববার ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের কলতাপাড়া ও গাজীপুর বাজারে পাল্টাপাল্টি এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।

সদ্য বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা এবং সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন খানের অনুসারীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। সোমনাথ সাহার পক্ষে ছিলেন উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল হক সরকার এবং মোফাজ্জল হোসেন খানের পক্ষে ছিলেন ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে গত মঙ্গলবার গৌরীপুরে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরদিন বুধবার বিকেলে ডৌহাখলা ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে নন্দীগ্রামের বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন ও তাঁর ভাতিজা আবু বকর সিদ্দিকের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় নাজিম উদ্দীন বাদী হয়ে কাইয়ুম ও তাঁর কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। অন্যদিকে একই দিন বিকেল পাঁচটার দিকে ডৌহাখলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল হকসহ তাঁর কর্মীদের বিরুদ্ধে কলতাপাড়া বাজারে বর্তমান চেয়ারম্যান কাইয়ুমের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। হামলাকারীরা কাইয়ুমকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়ে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ নিয়ে থানায় আরেকটি মামলা হয়।

আবদুল কাইয়ুমের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলতাপাড়া বাজারে মানববন্ধন করেন তাঁর কর্মীরা। দুপুর ১২টার দিকে কলতাপাড়া বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে গাজীপুর বাজারে পাল্টা মানববন্ধন করেন শহীদুল হকের কর্মীরা। দুটি মানববন্ধন থেকে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

এদিকে বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যানের কর্মীদের বিরোধপূর্ণ অবস্থানের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন। আজ দুপুরে কলতাপাড়া ও গাজীপুর বাজারে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা শঙ্কার কথা জানান। এ নিয়ে ছয়জনের সঙ্গে কথা হলেও তাঁদের কেউই নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘এখনো আমি ঘর থেকে বের হতে পারছি। নিজেকে অনিরাপদ মনে হচ্ছে। আমার ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

তবে সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাইয়ুম একজন সন্ত্রাসী। তাঁর নামে কয়েকটি মামলা হয়েছে। তাঁর গ্রেপ্তারের দাবি করি।’

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, দুটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই এলাকায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।