খুলনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নব্য জেএমবির ২ সদস্যের ১০ বছরের কারাদণ্ড

প্রতীকী ছবি

খুলনায় নব্য জেএমবির ২ সদস্যের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে খুলনা সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনালের বিচারক রোজিনা আক্তার ওই রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত ওই দুজন হলেন নুর মোহাম্মদ ও মো. মোজাহিদুল ইসলাম। নুরের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায়। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা দুজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মোজাহিদুলের বাড়ি বগুড়া জেলায়। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তাঁরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে নুর মোহাম্মদ ছিলেন বিবিএ চতুর্থ বর্ষের আর পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন মো. মোজাহিদুল ইসলাম। বর্তমানে তাঁরা দুজন ঢাকার নীলখেতে অবস্থিত আইসিএমএবি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। বয়স ও ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ওই দুই জঙ্গি যেন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রায়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ (সংশোধিত-২০১৩) তিনটি ধারায় তাঁদের সাজা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই আইনের ৯ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। টাকা অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই আইনের ১০ ধারায় প্রত্যেককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

রায়ের আদেশে বিচারক বলেছেন, সব সাজা একসঙ্গে চলবে, তা ছাড়া যত দিন আসামিরা হাজতে ছিলেন, তা তাঁদের কারাদণ্ডের মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। আইসিএমএবি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ও খুলনা জেল সুপারকে নীতিমালার মধ্যে থেকে ওই দুই জঙ্গি যাতে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. শওকত আলী বলেন, ওই দুজন নব্য জেএমবি দলের সদস্য ছিলেন, তা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। মামলায় মোট ২২ জনের সাক্ষ্য নিয়ে বিচারক রায় ঘোষণা করেছেন। রায় ঘোষণার ক্ষেত্রে বিচারক তাঁদের বয়স ও মেধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন।

খুলনা সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী দীপন কুমার মণ্ডল বলেন, ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি রাতে খুলনা নগরের গল্লামারী এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে নূর মোহাম্মদ ও মো. মোজাহিদুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরদিন ওই ঘটনায় দুজনকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন তৎকালীন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রহিত কুমার বিশ্বাস। মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২২ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন কেএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মো. এনামুল হক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে মামলাটি খুলনা সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ আদালতে পাঠানো হয় গত বছরের ১৬ নভেম্বর।