নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তসংলগ্ন এলাকার পরিবারগুলোর তালিকা করার সিদ্ধান্ত

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া। বেড়ার পাশে পাহাড়-জঙ্গলে পাহারা দিচ্ছে সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী। সম্প্রতি তোলা ছবি
ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে শূন্যরেখা–সংলগ্ন এলাকায় পরিবারগুলোর তালিকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  আজ রোববার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে প্রশাসনের সঙ্গে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

ওই সভা সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে পরিবারগুলো সরিয়ে নেওয়ারও চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। প্রায় মাসব্যাপী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সেই দেশের বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই চলছে। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে বাংলাদেশের ভেতরে মর্টারের গোলা এসে পড়ছে। এতে সীমান্তরেখায় বসবাসরত বেশ কিছু পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। গত ২৮ আগস্ট দুটি ও গত শুক্রবার চারটি মর্টারের গোলা এসে পড়েছে। সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা শিবিরে এসে পড়া মর্টারের গোলায় একজন রোহিঙ্গা কিশোর নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা সভা শেষে জানিয়েছেন, প্রশাসন থেকে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোর তালিকা করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে যেসব পরিবার সীমান্তরেখা বরাবর বসবাস করছেন এবং চাষাবাদের জমি রয়েছে, তালিকায় সেসব পরিবার থাকবে। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে পরিবারগুলো সরিয়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনার কথাও হয়েছে। সভায় জনপ্রতিনিধিরা শূন্যরেখা–সংলগ্ন এলাকায় অনুমানিক ৩০০ পরিবার থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন।

ঘুমধুম ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের  সদস্য দিল মোহাম্মদ বলেন, শূন্যরেখা ও এর সংলগ্ন এলাকায় যাঁদের জমিজমা ও যাঁরা বসবাস রয়েছে, তাঁদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। পরিবারগুলোর সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় কী পরিমাণ জমিজমা রয়েছে, তা–ও তালিকার মধ্যে থাকবে।

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্তসংলগ্ন পরিবারের তালিকা করতে বলা হলেও সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে, এই রকম চিন্তাভাবনা রয়েছে বলা হয়েছে।  

তবে সীমান্তসংলগ্ন পরিবারের তালিকা করার ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌসের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস। সভায় ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন।