কলেজছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে এসআইকে প্রত্যাহার
কলেজছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে বরিশালে পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।
প্রত্যাহার হওয়া ওই এসআই হলেন রেদোয়ান ইসলাম ওরফে রিয়াদ। তিনি নগরের কাউনিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, না জানিয়ে এক থানার এসআই অন্য থানা এলাকায় অভিযান চালানোর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ জন্য ওই এসআইকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মোসলেম জমাদ্দার নামের এক ব্যক্তি আজ সকালে এসআই রেদওয়ানের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। মোসলেম বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চরফেনুয়া গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগে তিনি বলেন, ২১ নভেম্বর সকালে কোতোয়ালি মডেল থানার বরিশাল নৌবন্দর থেকে তাঁকে ও তাঁর ছেলে নগরের আলেকান্দা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহ বিন লাদেনকে আটক করেন এসআই রেদওয়ান। আটকের পর পায়ের নিচে ইয়াবা ফেলে তাঁদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান তিনি। পরে তাঁদের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন এসআই রেদওয়ান ও তাঁর কয়েকজন সহযোগী। পরে মোসলেম জমাদ্দারকে ছেড়ে দিয়ে তিনটি ইয়াবা জব্দের কথা বলে ছেলের বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় মামলা দেওয়া হয়।
আজ দুপুরে মোসলেম জমাদ্দার ও তাঁর ভাতিজাসহ তিনজন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তিনি ২১ নভেম্বরের পুরো ঘটনা তাঁকে খুলে বলেন এবং বিচার দাবি করেন। পরে তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে এসআই রেদওয়ান ও তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মোসলেম জমাদ্দার বলেন, জমিসংক্রান্ত এক মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে ২১ নভেম্বর সকালে লঞ্চে শ্রীপুর থেকে বরিশাল নদীবন্দরে আসেন তিনি ও তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ। নৌবন্দরের ফটক থেকে বের হওয়ার সময় এসআই রেদওয়ান হোসেন ও তাঁর সঙ্গে থাকা আরেকজন তাঁদের তল্লাশি করেন।
মোসলেমের অভিযোগ, এরপর মাদক উদ্ধারের নামে দিনভর তাঁদের সঙ্গে নিয়ে নগরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে এক লাখ টাকা দাবি করেন রেদওয়ান। ওই টাকা নিতে তিনি বিকাশ নম্বর দেন এবং তাঁকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে কাউনিয়া থানায় আটকে রাখেন। পরে আবদুল্লাহকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করে ওই থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন এসআই রেদওয়ান। পরে ওই মামলায় আবদুল্লাহকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে এক দিন পর জামিন আবেদন করা হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুল্লাহকে জামিন দেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এসআই রেদওয়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি গুরুতর। এ ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।