রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা ৩ দিন ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেবেন না

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবারছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘অবহেলাজনিত হত্যা’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাঁরা প্রাথমিক তদন্তের তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে কর্মসূচি পালন শেষ এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

তাঁদের অন্য তিনটি দাবি হলো প্রশাসন কর্তৃক সায়মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সংস্কার ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সুইমিং পুলের একটি অংশের গ্যালারি সায়মার নামে নামকরণ।

সমাবেশে অংশ নিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইবনে ফজল বলেন, ‘সায়মার মৃত্যুর সময় তিনজন প্রশিক্ষক সুইমিং পুলের ভেতরে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁরা কেউ সায়মার অনুপস্থিতি লক্ষ করেননি। তাঁরা যখন বুঝতে পেরেছেন সায়মা ডুবে গেছেন, তখন তাঁরা জিমনেসিয়াম থেকে লোক এনে সায়মাকে উদ্ধার করেছেন। আমার প্রশ্ন, তাঁরা কেমন প্রশিক্ষক? একজন শিক্ষার্থী ডুবে আছেন, তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করতে পারেন না! প্রশাসন তাঁদের কীভাবে নিয়োগ দিয়েছে, সে প্রশ্নও থেকে যায়।’

ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ইবনে ফজল বলেন, ‘প্রশাসন প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের জন্য তিন দিন সময় নিয়েছে। আমরা তিন দিন সময় দিয়েছি। তবে এই তিন দিন আমরা কোনো প্রকার একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিব না। সাময়া হত্যার বিচার নিশ্চিত করেই আমরা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরব।’

বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি হাসান বলেন, ‘মৃত্যুর মিছিলে নতুন নাম যুক্ত হলো সায়মা। রাষ্ট্রযন্ত্র প্রশাসন এর দায় এড়াইতে পারে না। এই মৃত্যুর মিছিল আর লম্বা না হোক। আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেই দাবিদাওয়া রয়েছে, এই দাবি আদায়ের জন্য আমরা তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।’

আরও পড়ুন

গতকাল রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে নামলে পানিতে ডুবে যান সায়মা হোসাইন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মন্নুজান হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ায়।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।