সম্মেলনের এক বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি

সম্মেলনের পর সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওলাদুল ইসলাম নির্বাচিত হন।

রফিকুল ইসলাম ও আওলাদুল ইসলাম

এক বছর আগে শেরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। ফলে দলের অনেক নেতা-কর্মী হতাশায় ভুগছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় দলীয় কর্মসূচি পালনে অনেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। সেই সঙ্গে সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা করছেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গাজীরখামার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আওলাদুল ইসলাম নির্বাচিত হন।

নেতা-কর্মীরা বলেন, সম্মেলনের এক বছর হয়ে গেলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া আগের কমিটির সব নেতাই এখন নিজেদের সাধারণ কর্মী বা সাবেক নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। ফলে অনেকের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দলীয় পরিচয়ের অভাবে দলের কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে অনেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। অথচ নির্বাচন আসছে। এ সময়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও লছমনপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. আবদুল হাই বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় দলের অনেকের মধ্যে হতাশা আছে। সেই সঙ্গে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনায়ও অনীহা আছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিরোধী দলের যেকোনো আন্দোলন-কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার জন্য অচিরে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা প্রয়োজন।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মো. মুশারফ হোসেন বলেন, কমিটি না হওয়ায় দলীয় কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদাধিকার বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। কিন্তু দলের উপজেলা কমিটি না থাকায় সাবেক নেতারা ইউনিয়ন কমিটিগুলোকে নির্দেশনা দিতে পারছেন না।

সাবেক সহসভাপতি মো. ছোবাহান আলী বলেন, তিনি পদ-পদবি না থাকলেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে পাঠানোর কথা থাকলেও তা আদৌ পাঠানো হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। দ্রুত কমিটি গঠনের জন্য দলীয় নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান জানান এই নেতা।

সম্মেলনের এক বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় দলীয় কার্যক্রম স্থবির হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম। তবে তিনি বলেন, দুই-তিন মাস আগেই উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি কমিটি গঠন করে দলের জেলা কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সেটি প্রকাশ পায়নি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের হুইপ মো. আতিউর রহমান বলেন, অনেক আগেই দলের জেলা কমিটি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে অনুমোদন দিয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। শিগগিরই কমিটির নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।