শাহীনুর পাশা বললেন, ‘জোটের কারণে ৩৬ জন মন্ত্রী-এমপি পরাজিত হতে যাচ্ছেন’

জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টে পথসভায় শাহীনুর পাশা চৌধুরীছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপিসহ অন্যান্য দলকে আওয়ামী লীগের আসন ‘ছাড়’ দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে সাবেক সংসদ সদস্য শাহীনুর পাশা চৌধুরী নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় এক নতুন তথ্য হাজির করেছেন।

তিনি বলেছেন, জোটের কারণে ৩৬ জন মন্ত্রী-এমপি নির্বাচনে পরাজিত হতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ-৩ আসনও (শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর) আছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই আসনে নাকি নৌকার ব্যাজ পকেটে লাগিয়ে মানুষ তাঁর সোনালী আঁশ প্রতীকে ভোট দেবেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

আজ রোববার বিকেলে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

আইনজীবী শাহীনুর পাশা চৌধুরী বলেন, এই আসনে তিনি নিশ্চিতভাবে জয়ী হবেন। আসনটি (সিট) নিশ্চিত করেই তিনি নিজের দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও আলেম–ওলামাদের প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।

শাহীনুর পাশা তাঁর কর্মী-সমর্থকদের সাহস দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের সেই ভাই, যে ১৯৯৬ সালে এই আসনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রীকে নাকানিচুবানি খাইয়ে পরাজিত করেছি।’

আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গন্ডগোলের চেষ্টা করবেন না। এসব দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ তা করলে ছাড় দেওয়া হবে না।’

শাহীনুর পাশার চৌধুরী গরম বক্তব্য দিলেও এবার মাঠে তাঁর অবস্থা অনেকটা ‘নরম’ বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা। কারণ, শাহীনুর পাশার ছেড়ে আসা জমিয়তের নেতা–কর্মীরা এবার তাঁর পাশে নেই। যদিও তিনি সবাই আছেন, এমনটা বলার চেষ্টায় আছেন। এ ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধায় এম এ মান্নান। তিনি এই আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের গত সরকারে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, এখন পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব আছেন।
এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত জাতীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হন শাহীনুর পাশা চৌধুরী। উপনির্বাচনে তখন আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দুই বছরের জন্য সংসদ সদস্য হয়েছিলেন শাহীনুর পাশা চৌধুরী। এরপর ২০০৮, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও আর জয়ী হতে পারনেনি।

আরও পড়ুন

শাহীনুর পাশা চৌধুরী তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেওয়ার আগে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ছিলেন। দলের নীতিনির্ধারকদের একজন ছিলেন তিনি। গত ২৩ নভেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের এই নেতা। সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। পরে জমিয়ত তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ স্থগিত করে। এরপর তিনি নিজেই দল ছেড়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন। শাহীনুর পাশা তখন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘জমিয়তের জন্য নিজের জীবন, যৌবন সব শেষ করলাম। অথচ আজ দলের একটি অংশ ষড়যন্ত্র করে আমাকে দল ছাড়তে বাধ্য করল।’

রোববার দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য জানতে রাতে শাহীনুর পাশা চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন না ধরায় কথা বলা যায়নি।

এই আসনে অন্য দুই প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির তৌফিক আলী ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (জেপি) তালুকদার মকবুল হোসেন।

আরও পড়ুন