ফরিদপুরে মতবিরোধের জেরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত এক শিক্ষার্থীকে মারধর

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী রুবেল মিয়া
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নেতৃত্ব নিয়ে মতবিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তাঁকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কলেজের রসায়ন বিভাগের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম রুবেল মিয়া (২৭)। তিনি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ইসমাইল মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে। রুবেল সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুবেল মিয়া জানান, ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে একজনকে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমান মুখপাত্র নীরব ইমতিয়াজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন মুখপাত্র নির্বাচনের জন্য গতকাল বিকেলে তাঁরা ৩৫-৪০ জন রাজেন্দ্র কলেজের রসায়ন বিভাগের একটি কক্ষে আলোচনার জন্য বসেন। ওই সময় তাঁর ওপর চার-পাঁচজন হামলা করেন। তাঁকে বেধড়ক কিল-ঘুষি মারা শুরু হয়। একপর্যায়ে কলেজের মাঠে নিয়েও তাঁকে মারা হয়। তবে কারা তাঁকে মারধর করেছে, তাঁদের নাম তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ সদস্যর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়। এ আন্দোলনের সঙ্গে শতাধিক মানুষ যুক্ত থাকলেও ওই গ্রুপে মাত্র ২৫-৩০ জনকে যুক্ত করা হয়। গ্রুপে আন্দোলনের বর্তমান মুখপাত্র নীরব ইমতিয়াজকে যুক্ত করা হয়নি। পাশাপাশি কোনো রকম আলাপ আলোচনা ছাড়াই ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তাবিত কমিটির নামে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি তালিকা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানো হয়। আলোচনার একপর্যায়ে এসব নিয়ে মতবিরোধের জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

নীরব ইমতিয়াজ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সফল হওয়ার পর অনেক ব্যক্তি এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। সবার মধ্যে নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা, অনমনীয় আচরণ ও প্রভাব দেখানোর প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের চতুর্মুখী চাপের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, যিনি আহত হয়েছেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। গতকাল রাজেন্দ্র কলেজে তাঁদের এক সভা হয়। ওই সভায় সমন্বয়কদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তিনি হাসপাতালে গিয়ে আহত ওই শিক্ষার্থীকে দেখে এসেছেন। এ ব্যাপারে থানায় শনিবার বেলা দুইটা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।