হবিগঞ্জে বিএনপির শতাধিক নেতা–কর্মীর নামে পুলিশের দুটি মামলা

হবিগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধলে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনের জায়গাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। গত শনিবার বিকেলে
ফাইল ছবি

হবিগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচি পালন নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আজ সোমবার বিকেলে বিস্ফোরক আইনে ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জি কে গউছসহ শতাধিক নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা দুটি করা হয়।

মামলা দুটিতে ১৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার দিন পুলিশ তাঁদের আটক করে। হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক বদিউজ্জামান মামলার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত শনিবার বিকেল চারটায় হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে। বিকেল পাঁচটার দিকে সমাবেশস্থল থেকে জি কে গউছের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়কে আসামাত্র হবিগঞ্জ সদর থানার একদল পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মারমুখী হয়ে উঠলে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসও ছুড়ে। থেমে থেমে সংঘর্ষ প্রায় দুই ঘণ্টা চলতে থাকে। এ ঘটনায় বিএনপির ৩০০ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।

এদিকে বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রোববার বিকেলে হবিগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি শহরের শায়েস্তানগর মোড় থেকে ফেরার পথে মিছিলকারীরা শায়েস্তানগর এলাকায় অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সামনে টানানো ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়তে থাকেন। তখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। তবে রোববারের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

এদিকে সোমবার বিকেলে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০০-৬০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৯৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬০০-৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটিতে পুলিশের ৪০ জন সদস্য আহত এবং সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশকে ৯০০ গুলি ব্যবহার করতে হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার করার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জি কে গউছ সোমবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, মামলা করে বিএনপির আন্দোলনকে দুর্বল করতে চায় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের ইশারায় পুলিশ বিএনপির সহস্রাধিক নেতার ওপর এ মামলা দিয়েছে। এসব মামলা দিয়ে আন্দোলনকে দুর্বল করা যাবে না। তাঁরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসবেন বলে জানান এই বিএনপি নেতা।

আরও পড়ুন