সাজেকে শত শত পর্যটক রাত কাটিয়েছেন বারান্দায় ও স্থানীয়দের বাড়িতে

রুইলুই ভ্যালির চারপাশে মনোরম পাহাড় আর সাদা তুলোর মতো মেঘের সারি আপনাকে মুগ্ধ করবেইপ্রথম আলোর ফাইল ছবি

বিজয় দিবসের ছুটিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে (রুইলুই ভ্যালি) পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কক্ষ না পেয়ে শত শত পর্যটক রিসোর্ট ও কটেজের বারান্দায় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। এ ছাড়া অনেক পর্যটক সাজেক থেকে ফিরে গেছেন।

গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ও আজ শনিবার বিজয় দিবসের ছুটির থাকায় অনেক পর্যটক সাজেকে বেড়াতে আসেন। তাঁদের সংখ্যা রিসোর্ট-কটেজের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় কক্ষসংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি।

শীতে রাঙামাটির রুইলুই ভ্যালিতে প্রাকৃতিক দৃশ্য অপরূপ হয়ে ওঠে। সবচেয়ে উঁচু পাহাড়টির চূড়া থেকে দেখলে নিচের মেঘ ও কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়গুলোকে শুভ্র সমুদ্রের মতো মনে হয়। সুন্দর মুহূর্ত দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন হাজারো পর্যটক। এর মধ্যে বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় হয়েছে।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, সমিতির আওতায় ১১৪টি রিসোর্ট ও কটেজ আছে। এগুলোয় চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার পর্যটক থাকতে পারেন। এবার বিজয় দিবসের চার দিন আগেই এসব রিসোর্ট-কর্টেজ আগাম বুকিং হয়ে যায়। গতকাল সারা দিন যাঁরা কক্ষ বুকিং ছাড়া রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণে গিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় মানুষের বাড়ির বারান্দা, রিসোর্ট-কটেজের বারান্দা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে গাদাগাদি করে ঘুমিয়েছেন। রুইলুই ও কংলাকপাড়ার এসব স্থানে পাঁচ শতাধিক পর্যটক রাত কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছে সমিতি। এ ছাড়া কক্ষ না পেয়ে গতকাল দুপুরে দেড় শতাধিক পর্যটক রুইলুই পর্যটনকেন্দ্র থেকে ফিরে গেছেন।

১০ বন্ধুর সঙ্গে ঢাকার মিরপুর থেকে সাজেকে বেড়াতে এসেছেন মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আগাম কক্ষ কোনো ভাড়া নেননি। রুইলুই ভ্যালিতে এসে দেখেন, কোনো কক্ষ খালি নেই। তাই তাঁরা স্থানীয় সাগর ত্রিপুরা নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে পাটি বিছিয়ে গাদাগাদি করে ঘুমিয়েছেন। তাঁরা ছাড়াও ওই ছোট ঘরে আরও সাতজন পর্যটক রাত কাটিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রিসোর্ট-কটেজের বারান্দা, স্টোররুম ও ক্লাব ঘরে ঘুমিয়েছেন অনেকে। এ জন্য প্রত্যক পর্যটককে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে দিতে হয়েছে বলে জানান আনোয়ার।

হিল ভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্রজিৎ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ১০টি কক্ষই আগাম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ধারণক্ষমতা চেয়েও কক্ষগুলোয় বেশি পর্যটককে রাখা হয়েছে। সব রিসোর্ট-কটেজে একই অবস্থা। তবুও শত শত পর্যটককে কক্ষ দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

রুইলুই রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ১১৪টি রিসোর্ট-কটেজে সর্বোচ্চ চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার পর্যটক থাকতে পারেন। কিন্তু এবার তার চেয়ে বেশি পর্যটক এসেছেন। সে জন্য আমরা তাঁদের কক্ষ দিতে পারিনি। চার শ থেকে পাঁচ শ পর্যটক রিসোর্ট-কটেজের বারান্দা, স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরের বারান্দা ও স্থানীয়দের বাড়ি-ঘরে ঘুমিয়েছেন।’