যেকোনো মূল্যে নদী ও জলাশয় দখল-দূষণমুক্ত রাখার আহ্বান

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী রোববার সকালে পটুয়াখালী শহরের লাউকাঠি নদীর দখল, দূষণ ও নাব্যতা পরিদর্শন করেন
ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ চৌধুরী বলেছেন, কোনোভাবেই নদী হত্যা করা যাবে না। এটি একটি অপরাধ। নদীতে ফেলা হচ্ছে গৃহস্থালির বর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। যেকোনো মূল্যে নদ-নদী ও জলাশয় দখল ও দূষণমুক্ত রাখতে হবে।

আজ সোমবার সকালে পটুয়াখালীর লাউকাঠী নদীর দখল, দূষণ ও নাব্যতা পরিস্থিতি দেখে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি পটুয়াখালী শহরের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত লাউকাঠী নদী তীর পরিদর্শনে গিয়ে বেড়িবাঁধ ও বিভিন্ন স্থাপনা দেখে হতাশা ব্যক্ত করেন।

পরিদর্শনকালে নদী রক্ষা কমিশনের উপপরিচালক (প্রশাসন) খ ম কবিরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গতকাল রোববার রাতে পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

মতবিনিময়কালে মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, সিএস জরিপ অনুযায়ী পটুয়াখালী শহরে ৫৩টি খাল ছিল। কিন্তু এখন অধিকাংশই বিলুপ্ত। যেগুলো অবশিষ্ট আছে সেগুলোও নালায় পরিণত হয়েছে। শহরের সুতাখালী খালটি একসময় ৮০ ফুট প্রশস্ত ছিল। এখন মাত্র ১০ থেকে ১২ ফুট আছে। খালের উভয় পাশের তীর দখল করে বড় বড় ভবন বানানো হয়েছে। এসব স্থাপনার মালিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ অনেক প্রভাবশালী। তাঁরা যত ক্ষমতাশালী হোন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, পটুয়াখালী শহরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে প্রবাহিত বহালগাছিয়া খাল দিয়ে একসময় স্টিমারসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল করত। প্রায় চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই খালটিতে চারটি বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। দখল ও দূষণের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এ অবস্থা আরও দুর্বিষহ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দ্রুত বাঁধ অপসারণ করে খালটির সঙ্গে সংযোগকারী নদীর সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

মনজুর আহমেদ চৌধুরী আরও বলেন, খাল-নদী, দখল-দূষণের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনো আপস করা যাবে না। ২০১৫ সাল থেকে দেশের নদ-নদী ও খালের অস্তিত্ব রক্ষায় নদী রক্ষা কমিশন কাজ করছে। আর্থিক ও জনবলসংকট সত্ত্বেও তাঁরা সারা দেশে কাজ করে যাচ্ছেন। এ কাজে সমাজের সচেতন মহলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।