‘আজ শিক্ষকদেরও কোনো নিরাপত্তা নেই’

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

গাজীপুরের টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম জিয়াউর রহমানের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসছেন তাঁর সহকর্মী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর থেকেই একে একে তাঁরা জড়ো হন। এ সময় তাঁরা ওই শিক্ষকের লাশ উদ্ধারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন।

স্কুলটি টঙ্গীর বিসিক এলাকায় অবস্থিত। আজ দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়টিতে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক জিয়াউরের সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের জটলা।

আরও পড়ুন

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও তাঁর সহকর্মী মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জিয়াউর রহমান বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর। তাঁর আগে তিনি ছিলেন কালীগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ে। তিনি গণিত পড়ান। বিদ্যালয়ে প্রায় ৪৩ শিক্ষক ও প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাঁর স্ত্রী মাহমুদা আক্তার জলি চাকরি করেন পাশের আমজাদ আলী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রতিদিন স্কুল ছুটি হলে মাহমুদা চলেন আসেন এখানে। এরপর এখান থেকেই একসঙ্গে নিজেদের প্রাইভেট কারে তাঁরা বাসায় যেতেন।

নুরুজ্জামান আরও বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো গতকাল বুধবারও জিয়াউরের স্ত্রী স্কুলের সামনে এসে দাঁড়ান। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে একসঙ্গে তাঁরা রওনা দেন বাসার উদ্দেশ্যে। কিন্তু রাত দুইটার দিকে হঠাৎ করেই তাঁর ছেলে মেরাজ মুঠোফোনে জানান তাঁরা বাসায় ফেরেননি। এটা শুনেই খুব অবাক হই। তাঁকে দ্রুত থানায় যোগাযোগ করতে বলি। আমিও তাঁদের চিন্তায় সময় পার করতে থাকি। এর মধ্যেই ভোর ৪টার দিকে তাঁদের লাশ উদ্ধারের খবর পাই। এর পর থেকেই আমরা শোকাহত হয়ে পড়ি। সকাল থেকেই সব শিক্ষকেরা যোগাযোগ করতে থাকেন। কেউ কেউ সমবেদনা জানাতে আসেন স্কুলে।’

নুরুজ্জামান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক জিয়াউর ছিলেন সব শিক্ষক থেকে আলাদা। তিনি সবচেয়ে মিশুক ও নরম স্বভাবের মানুষ ছিলেন। কিন্তু তাঁর মতো মানুষের এমন পরিণতি হবে, তা ভাবতেই পারছি না। আজ আমরা শিক্ষকেরা সত্যিই অসহায়। আমাদের শিক্ষদেরও কোথাও নিরাপত্তা নেই।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ খাইলকুর বগারটেক এলাকা থেকে আজ সকালে এই স্কুলশিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের বাসা ওই এলাকার কামারজুরি এলাকায়। কীভাবে এ দম্পতির মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।