প্রতিবন্ধী কিশোরকে থাপ্পড়, স্বজনদের মারধরে মসজিদ কমিটির সভাপতি নিহত

পিটিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর রায়পুরায় ১৫ বছর বয়সী শারীরিক ও বাক্‌প্রতিবন্ধী কিশোরকে থাপ্পড় দেওয়ায় স্বজনদের মারধরে স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম চান মিয়া (৬৮)। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের শিমুলতলী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত চান মিয়া স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে জুমার নামাজ আদায় করতে চান মিয়া ওই মসজিদে গিয়েছিলেন। নামাজ শেষে বেলা দুইটার দিকে কয়েকজন মিলে মসজিদের ভেতরে বসে দানবাক্সে জমা পড়া টাকা গণনা করছিলেন। ওই সময় স্বাধীন নামে শারীরিক ও বাক্‌প্রতিবন্ধী এক কিশোর মসজিদের বারান্দায় অবস্থান করে উচ্চস্বরে চেঁচাচ্ছিল। এতে চান মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে গিয়ে ওই কিশোরকে চড় মারেন। সে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে গিয়ে তার দুই মামা সোহেল মিয়া ও জামাল মিয়াকে ইশারা-ইঙ্গিতে ঘটনা জানায়।

এরপর সোহেল ও জামাল আরও লোকজন সঙ্গে নিয়ে চান মিয়ার কাছে ঘটনা জানতে চান। কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে কেউ একজন চান মিয়ার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথা ফেটে গিয়ে জখম হয়। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে মুসল্লিরা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে মরজাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় একজন প্রতিবন্ধী কিশোরকে শাসন করায় তার স্বজনেরা উত্তেজনার বশে এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ও মসজিদ কমিটির সভাপতি চান মিয়াকে হত্যা করেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পেরে পুলিশের একাধিক দল রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাফায়েত হোসেন বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ ঘটনাটি জানতে পারে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাড়িঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। আর নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরে তাঁরা মামলা করবেন।