ঝিনাইদহে তিন ভাইবোনকে পুড়িয়ে হত্যা দায়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড
ঝিনাইদহে তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার মামলার একমাত্র আসামি ইকবাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার সকালে ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ মো. নাজিমুদ্দৌলা এ রায় দেন।
ইকবাল হোসেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর মসজিদপাড়া এলাকার গোলাম নবীর ছেলে। তবে রায় ঘোষণার সময় ইকবাল হোসেন আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ইসমাইল হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার কবিরপুর মসজিদপাড়া এলাকার গোলাম নবীর বাড়িতে তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। গোলাম নবীর দুই ছেলে ইকবাল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জেরে ইকবাল তাঁর ছোট ভাই দেলোয়ারের দুই ছেলে মোস্তফা সাফিন (৭) ও মোস্তফা আমিন (১০) এবং বড় বোনের ছেলে মাহিন হাসানকে (১১) ঘরের মধ্যে আটকে রেখে গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ওই তিন শিশু পুড়ে মারা যায়।
ঘটনার দিনই ইকবালকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরে দেলোয়ার বাদী হয়ে ইকবালকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ইকবালকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই ইকবাল জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এর পর থেকেই ইকবাল পলাতক।
এ দিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর শৈলকুপার সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে শহরে শোক র্যালি, বিক্ষোভ মিছিল, থানা ঘেরাও ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়। সেই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়।
দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি
মামলার রায়ে খুশি হয়েছেন মোস্তফা সাফিন ও মোস্তফা আমিনের মা শিউলী খাতুন। তিনি বলেন, আদালত আসামিকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। এখন তিনি আশা করছেন, আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করা হবে।
দুই ছেলেকে হারানোর পর শিউলী খাতুনের কোলজুড়ে এসেছে আরেক ছেলেসন্তান মো. আবদুল্লাহ। চার বছরের এই ছেলেকে নিয়ে তিনি বেঁচে আছেন। রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তিনি আতঙ্কে আছেন জানিয়ে শিউলী বলেন, ‘সারাক্ষণ ভয় হয়, নতুন করে কিছু না ঘটায়। শুনেছি, ইকবাল জামিনে বের হওয়ার পর থেকে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। গত পাঁচ থেকে ছয় মাস সে আদালতে হাজিরা না দিয়ে পলাতক।’