শ্রীমঙ্গলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা

ভাগাড় সরানোর দাবিতে মানববন্ধন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সকালে কলেজের সামনেছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকালে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তাঁরা ক্লাস বর্জন করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে পৌরসভার বিশাল ময়লার ভাগাড় আছে। প্রতিদিন পুরো শহরের ময়লা–আবর্জনা এখানে এনে ফেলা হয়। ময়লার গন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকা কষ্টকর। শিক্ষার্থীদের নাকমুখ চেপে ধরে ক্লাস করতে হয়। এ ছাড়া ময়লার ভাগাড়ের জন্য সেখানে কুকুরের আনাগোনা বেশি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এ ভাগাড় সরানোর জন্য বারবার আন্দোলন করেছেন। বারবার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কিছুই করা হয়নি। বৃহস্পতিবারও কলেজের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমেছিলেন। আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

শিক্ষার্থীরা জানান, আজ থেকে কলেজের সব ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা ক্লাসে অংশ নেবেন না।

শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দীপ চাঁন কানু প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লার ভাগাড়ের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আজ শুনেছি, তারা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এভাবে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করলে তাঁদের অনেক ক্ষতি হবে। শিক্ষার্থীদের এ দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত এই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করা হোক। শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনায় ফিরে যাক।’

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিদিন পুরো শহরের ময়লা–আবর্জনা কলেজের সামনে এনে ফেলা হয়। ময়লার গন্ধে ক্লাসে থাকা কষ্টকর। আজ সকালে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া বলেন, ‘আমরা এই ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য অন্য জায়গা অধিগ্রহণ করেছি। কিন্তু সেখানে আমাদের ময়লার গাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আদালতে মামলা দিয়ে ময়লার ভাগাড়ের কাজ করতে দিচ্ছে না। মামলা জটিলতার কারণে আমরা ময়লার ভাগাড় স্থানান্তর করতে পারছি না। আমরাও চাই এই ময়লার ভাগাড় স্থানান্তর করা হোক।’

এর আগে ২০১৮ সালে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছিলেন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার হাজারো শিক্ষার্থী। সে সময় জেলা প্রশাসকের ছয় মাসের মধ্যে ভাগাড়টি স্থানান্তর ও ভাগাড়ের চারপাশে টিনের দেয়াল দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ প্রস্তাবে আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের কেউ কথা রাখেননি।