কিশোরগঞ্জে হত্যা মামলায় স্বামী কারাগারে, আসামি না হয়েও শিশুসন্তান নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন স্ত্রী

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র

হত্যা মামলার আসামি হয়ে স্বামী আছেন কারাগারে। কিন্তু আসামি না হয়েও আট মাসের শিশুসন্তান নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গৃহবধূ। আজ শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার চরপুমদী গ্রামে বাবার বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ভুক্তভোগী গৃহবধূ খোসনাহার ওরফে শারমিন। তাঁর দাবি, তাঁদের বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন। বাড়ির জায়গাও জবরদখল করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে খোসনাহার বলেন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের বুরুঙ্গারচর গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের তিন ছেলে খায়রুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম ও দীন ইসলাম। জমি নিয়ে খায়রুল ইসলামের সঙ্গে অপর দুই ভাই জহিরুল ইসলাম ও দীন ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তিনি (খোসনাহার) দীন ইসলামের স্ত্রী। ১৬ মে সন্ধ্যার পর খায়রুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে মো. রাকিব মিয়াসহ অজ্ঞাত ১০–১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দীন ইসলামের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা প্রথমে বাড়ির বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে লোকজনকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন এবং লুটপাট চালান। তাঁর (খোসনাহারের) কোলে থাকা শিশুসন্তানকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়। পিটুনি সহ্য করে সন্তানকে রক্ষা করেন তিনি। একপর্যায়ে ঝগড়া থামাতে গিয়ে রাকিব মিয়ার মা অনুফা আক্তারের মাথায় আঘাত লাগলে তিনি গুরুতর জখম হন। ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় রাকিব মিয়া বাদী হয়ে তাঁর চাচা জহিরুল ইসলাম ও দীন ইসলামসহ ছয়জনকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ জহিরুল ইসলাম ও দীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে রাকিবের নেতৃত্বে বাড়িঘর কুপিয়ে তছনছ এবং জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন খোসনাহার। তিনি আরও বলেন, তাঁদের হুমকিতে বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। একমাত্র শিশুসন্তানকে নিয়ে তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অনুফা আক্তারের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের বিচার দাবি করেন গৃহবধূ খোসনাহার। মিথ্যা অভিযোগে করা মামলায় কারাগারবন্দী স্বামী ও ভাসুরের মুক্তিও দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মামলার বাদী রাকিব মিয়া বলেন, তাঁর প্রতিপক্ষ এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করে মায়ের হত্যা মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজন কারাগারে আছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।