নড়াইলে পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগ, স্ত্রীর মামলা

মামলাপ্রতীকী ছবি

নড়াইলের কালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুল কবিরের বিরুদ্ধে পরকীয়া, নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ তুলে আদালতে নালিশি মামলা করেছেন তাঁর স্ত্রী সাদিয়া কানিজ সিদ্দিকা।

গতকাল রোববার বিকেলে বিষয়টি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হাসান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. হাদীউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, পারিবারিকভাবে ২০০৮ সালে হাসানুল কবিরের সঙ্গে সাদিয়া কানিজ সিদ্দিকার বিয়ে হয়। হাসানের চাহিদা অনুযায়ী সাদিয়ার বাবা পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে যৌতুক হিসেবে নগদ অর্থ ও উপঢৌকন দেন। এ দম্পতির দুটি মেয়েসন্তান আছে।

সাদিয়ার অভিযোগ, পুলিশ থেকে প্রেষণে র‍্যাবে বদলি হওয়ার পর হাসানুল কবির এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি প্রতিবাদ করায় তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। প্রায় ছয় মাস আগে প্রাইভেট কার কেনার কথা বলে হাসানুল কবির ২৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। সাদিয়া টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।

চলতি বছর কালিয়া থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে যোগ দেন হাসানুল কবির। ২৭ সেপ্টেম্বর সাদিয়া দুই মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে কালিয়ায় চলে আসেন। ওই দিন যৌতুকের দাবিতে সাদিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর করে পৌরসভার গেস্টহাউসে রেখে যান হাসান। এরপর গত ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই গেস্টহাউসেই আবারও তাঁকে মারধর করা হয়। এসব ঘটনায় থানায় প্রতিকার না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে হাসানুল কবির বলেন, ‘২০১৯-২০ সালে এফডিআরের কিছু টাকা স্ত্রীর নামে দিয়েছিলাম। ২০২১ সালে আমার স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের চাপে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া পাকা বাড়ি, বসতভিটা ও ফসলি জমি মিলিয়ে মোট ৩৫ শতক লিখে দিই। সর্বমোট ৫৫ শতক জমি ও ১০ লাখ টাকার এফডিআর তাঁর নামে দেওয়া হয়, যার বর্তমান মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। এগুলো লিখে দেওয়ার পর আমি পরিবারের কাছে অনেকটা অতিথির মতো হয়ে গেছি।’

হাসানুল কবির আরও বলেন, ‘এবার শেষ সম্বলটুকু নেওয়ার জন্য সাদিয়া ও তাঁর পরিবার উঠেপড়ে লেগেছে। আমি সেটা দিতে চাই না। গত মাসের ২২ তারিখ ডাকযোগে সাদিয়াকে তালাকের কাগজ পাঠিয়েছি। সেটা পাওয়ার পরই হয়তো এখন মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে আদালতে গেছেন। আমিও চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক, যেন আমি নির্দোষ সেটা প্রমাণ করতে পারি।’