ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মামুনকে সহায়তা দিলেন পিরোজপুরের ডিসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মামুন আকনকে ভর্তির জন্য আর্থিক সহায়তা করেছেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ বড়মাছুয়া গ্রামের দিনমজুর আল আমিন আকনের ছেলে মামুন আকন এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু অর্থাভাবে মেধাবী মামুনের ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। প্রথম আলোতে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ভর্তির জন্য তাঁকে ২০ হাজার টাকার অর্থিক সহায়তা দিয়েছেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান।

আজ রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মামুন আকনের হাতে সহায়তা হিসেবে নগদ টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঊর্মি ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার প্রথম আলোতে ‘ঢাবিতে পড়ার সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ ছাড়া সোমবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণেও মামুন আকনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর মঠবাড়িয়ার ইউএনও ঊর্মি ভৌমিক বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানান।

মামুন আকন ২০১৯ সালে বড়মাছুয়া ইউনাইটেড হাই ইনস্টিটিউশন থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। ২০২১ সালে মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও জিপিএ-৫ পান তিনি। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর মেধাক্রম ৫৩।

মামুন আকন বলেন, ‘বসতঘর ছাড়া আমাদের কোনো সম্পদ নেই। বাবা দিনমজুরের কাজ করে যা পান, তা দিয়ে সংসারের খরচ চলে। প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভর্তির টাকা জোগাড় ও থাকা–খাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। জেলা প্রশাসক স্যার ২০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন। এ ছাড়া আরও এক ব্যক্তি সহায়তা করেছেন। এখন ভর্তির খরচ, বই কেনা ও ঢাকায় গিয়ে প্রাথমিকভাবে থাকা–খাওয়ার চিন্তা দূর হয়েছে। আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

মঠবাড়িয়ার ইউএনও ঊর্মি ভৌমিক বলেন, ‘প্রথম আলোতে মামুন আকনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রতিবেদন পড়ে আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানালে তিনি মামুনকে সহায়তার জন্য তাঁর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, মামুনের উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন।