যত্রতত্র ময়লা–আবর্জনা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ 

পৌরসভার সাতক্ষীরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। 

সাতক্ষীরা শহরের কাছারিপাড়া সড়কের পাশের নালা ময়লা–আবর্জনায় আটকে আছে।। বৃহস্পতিবার তোলা ছবি
প্রথম আলো

সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন এলাকার আস্তাকুঁড়গুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। শহরের নানা স্থানে ময়লা-আবর্জনা ও জীবজন্তুর মরদেহ ফেলে রাখা হয়। এসব পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এতে শহরের বেশ কিছু এলাকা দিয়ে দুর্গন্ধে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সড়কের পাশের নালাগুলোও ময়লা-আবর্জনা আটকে থাকে।

এতে শহরের অনেক স্থানে সড়কে পানি জমে থাকায় দুর্ভোগ পোহান মানুষ। পৌর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় আস্তাকুঁড় পরিষ্কার ও নালাগুলো সংস্কারের কথা বললেও এখন পর্যন্ত এসব বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সাতক্ষীরা পৌরসভা অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভাটি ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভায় নয়টি ওয়ার্ডে লোকসংখ্যা দুই লক্ষাধিক। ৩১ দশমিক ১০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় খাতাকলমে আস্তাকুঁড় রয়েছে ১১০টি। আর নালা রয়েছে ১৮৫ দশমিক ৩ কিলোমিটার। 

গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া, মুনজিতপুর, পলাশপোল, সুলতানপুরসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ স্থানে আস্তাকুঁড় নেই। কাটিয়া কাছারিপাড়ার শহরের প্রধান ডাকঘরের সামনে ও মুনজিনপুর এলাকার সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্যের বাড়িসংলগ্ন দুটি আস্তাকুঁড়ে ময়লা-আবর্জনার পাশাপাশি গরু, ছাগল ও মুরগির বর্জ্য ফেলা রয়েছে। এসব ময়লা কুকুর মুখ দিয়ে টেনে সড়কের ওপর নিয়ে যাচ্ছে। এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় পথচারীরা নাক চেপে চলাচল করছেন। 

সাতক্ষীরা শহরের ব্যস্ততম সড়ক শহীদ নাজমুর সরণিতেও একই অবস্থা। এ সড়কে কোনো আস্তাকুঁড় নেই। দূর থেকে ময়লা নিয়ে এসে ফেলে মানুষ ফেলে যাচ্ছে এ সড়কের পাশে। এসব মাসের পর মাস পরিষ্কার করা হয় না। সাতক্ষীরা প্রাণসায়ের খালের পশ্চিম পাশের সড়কটিতে অবস্থা আরও খারাপ। পাকা পোলের মোড় থেকে কাটিয়া ব্রিজ পর্যন্ত এ দেড় কিলোমিটার সড়কজুড়ে হোটেল ও বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। একই পরিস্থিতি শহরের নিউমার্কেট এলাকা ও সুলতানপুর বড়বাজারের। 

সাতক্ষীরা শহরের তালা এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিনি ব্যবসার কাজে প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে শহরের শহীদ রীমু সরণির প্রধান ডাকঘরের সামনে আসেন। এখানে ময়লা ফেলার জন্য একটি আস্তাকুঁড় থাকলেও তা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এসব আবর্জনা এমন দুর্গন্ধ ছড়ায়, ওই এলাকায় ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। 

সাতক্ষীরা পৌরসভার কনজারভেন্সি পরিদর্শক ইদ্রিস আলী জানান, ডাস্টবিন ও রাস্তার পাশে পরিষ্কার করার জন্য ৩৩ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করেন। ময়লা-আবর্জনা পরিবহনের জন্য দুটি ট্রাক ও দুটি ভ্যান রয়েছে। এর মধ্যে একটি ট্রাক ও একটি ভ্যান দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। ৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৌরসভার ময়লা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা করেও একটি ট্রাক ও একটি ভ্যান দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। তারপরও চেষ্টার ঘাটতি নেই। তিনি দাবি করেন, পৌরবাসী সচেতন নন। এক পাশ দিয়ে পরিষ্কার করে অন্য পাশে যাওয়ার আগে স্থানীয় বাসিন্দারা যেখানে–সেখানে ময়লা–আবর্জনা ফেলেন। প্রাণসায়ের খালের পশ্চিম পাশের সড়কের পাশ, পূর্ব পাশের শহীদ নাজমুল সরণির দুই পাশসহ জেলায় অধিকাংশ সড়কের পাশে ইচ্ছেমতো ময়লা ফেলা হয়। অনেক স্থানে আস্তাকুঁড় থাকলেও সেখানে না ফেলে সড়কের পাশে ফেলা হয়।