সিলেটে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে চোর সন্দেহে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে চোর সন্দেহে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয় এক যুবককে। গতকাল সকালে দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামেছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে চোর সন্দেহে এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আরফান মিয়া (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

প্রতিবন্ধী ওই তরুণের নাম জালাল মিয়া (২৭)। তাঁর একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি নেই। তিনি একই উপজেলার দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার আরফানও একই এলাকার বাসিন্দা।

এর আগে গতকাল সকালে দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামে জালাল মিয়াকে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার পর জালালের মা শিরিয়া বেগম বাদী হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। এতে আরফান মিয়া, তাঁর ভাই ইউনুছ আলীসহ তাঁদের পরিবারের ৬ সদস্যসহ মোট ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরে চুরির অপবাদ দিয়ে জালালকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান কয়েকজন। পরে তাঁকে দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামে নদীর পাড়ে একটি নৌকায় নেওয়া হয়। সেখানে হাত পিছমোড়া দিয়ে বেঁধে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে ইউনুছ আলীর বাড়িতে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে ওই বাড়ির সামনে একটি গাছের সঙ্গে জালালকে ঝুলিয়ে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে জালালের মা শিরিয়া বেগম (৫০) ঘটনাস্থলে যান। তিনি জালালকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

জালালকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের একটি একটি ভিডিও প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ৫৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, জালালের দুই হাত রশি দিয়ে বেঁধে গাছের ডালে সঙ্গে ঝোলানো হয়। এ সময় তিনি চিৎকার করে পা দিয়ে মাটি ছোঁয়ার চেষ্টা করছিলেন। একপর্যায়ে একাধিক ব্যক্তি লাঠি হাতে তাঁকে মারধর করতে উদ্যত হন। ওই সময় আশপাশের কয়েকজন মারধর না করতে বলেন। জালালকে গাছে ঝোলানোর সময় আশপাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ঘটনাটি দেখছিলেন। একপর্যায়ে তাঁর দুই হাত বাঁধা অবস্থায় গাছ থেকে মাটিতে নামানো হয়।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, চুরির অভিযোগে একজনকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে পাঠানোর কথা আছে।