নির্ধারিত সময়ের ৪ মাস পরও কাজ শেষ হয়নি

চুক্তি অনুযায়ী ৩০ মে কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করেনি।

কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর ওপর কাওনা এলাকায় সেতু। সম্প্রতি তোলা
প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া সড়কের নির্মাণাধীন কাওনা সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ ছাড়া যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য নির্মাণাধীন সেতুর পাশে নির্মিত সড়ক সরু হওয়ায় ঘটছে দুর্ঘটনা। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া আঞ্চলিক সড়কের নরসুন্দা নদীর ওপর নির্মাণাধীন কাওনা সেতু চুক্তির কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ৩০ মে। কিন্তু সেতুর চারটি গার্ডারের মধ্যে তিনটি গার্ডার নির্মাণ করার পর এক বছরের বেশি সময় ধরে সেতুর কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ঢাকা যাতায়াতের সময় কিশোরগঞ্জের সদর, হোসেনপুর, পাকুন্দিয়া এবং ময়মনসিংহের নান্দাইল ও গফরগাঁওয়ের যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এলজিইডির হোসেনপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে এলজিইডির অর্থায়নে ৪০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজের জন্য গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচটিবিএলের সঙ্গে চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী প্রায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু কাজ শুরুর কিছুদিন পরই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে যায়। পরে সেতুটি নির্মাণের জন্য কিশোরগঞ্জের এস আলম গ্রুপ চুক্তিবদ্ধ হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কের এ সেতুর নির্মাণকাজ বিলম্বিত হওয়ায় নিচু জমি দিয়ে বিকল্প কাঁচা রাস্তায় প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এক সপ্তাহ আগেও নিচু কাঁচা রাস্তা দিয়ে পারাপারের সময় রডবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে যায়।

হোসেনপুরের আড়াইবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান খুরশিদ উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করায় এ রকম দুর্ঘটনা ঘটছে। এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সেতু নির্মাণের সময় বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে সেতুর কাজ শুরুর কথা ছিল। তা না করে মাটি দিয়ে নদীর গতিপথ বন্ধ করে দায়সারাভাবে একটি সরু কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। 

এলজিইডির হোসেনপুর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল হক জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস আলমকে দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার জন্য বারবার চিঠি লিখেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এ ছাড়া এ পর্যন্ত যেটুকু কাজ করেছে, তার জন্য কোনো বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের স্বত্বাধিকারী এস আলম বলেন, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সব সামগ্রীর দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। এর মধ্যে নিয়মিত বরাদ্দের অর্থও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুর বাকি কাজ শেষ করা হবে।

এ বিষয়ে এলজিইডির কিশোরগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দের স্বল্পতার জন্য সেতুর নির্মাণকাজ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে।