শারীরিক সীমাবদ্ধতা জয় করে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে তানিশা

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় শুক্রবার তানিশাকে (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ঘাটাইল উপজেলা প্রশাসনছবি: সংগৃহীত

জন্মের পর থেকেই কথা বলতে পারে না জাইমা জারনাস তানিশা। কানেও শোনে খুব কম। তবে শারীরিক সীমাবদ্ধতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

তানিশা টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা সদরের সালেহা ইউসুফজাই বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ভোকেশনাল শাখার নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। বাড়ি ঘাটাইল সদর ইউনিয়নের কমলাপাড়া গ্রামে।

বাবা মো. জয়নাল আবেদীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী। বর্তমানে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। মা মাফুজুন নাহার ঘাটাইলের কমলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। মেয়ের এমন সাফল্যে বাবা-মা দুজনই খুশি।

তানিশার মা মাফুজুন নাহার বলেন, জন্মের পর থেকে তানিশা কথা বলতে পারে না। কানেও শোনে কম। ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করে। লেখাপড়ার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ। ঘাটাইলের শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাসে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘প্রয়াসে’ শিশু শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে। এরপর ঘাটাইল সদরের সালেহা ইউসুফজাই বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এবার এসএসসি ভোকেশনাল শাখায় পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

মাফুজুন নাহার বলেন, ‘পড়াশোনার ব্যাপারে স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি আমিও সহযোগিতা করতাম। সবার সহযোগিতার কারণে তার ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়েছে। তানিশার একমাত্র ভাই প্রবাসী। তানিশার ইচ্ছা ভবিষ্যতে বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা নেবে।’

তানিশার সাফল্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সবাই আনন্দিত। ইংরেজির শিক্ষক বাসুদেব পাল জানান, তানিশা পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী। বাক্‌প্রতিবন্ধিতা তার লেখাপড়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তিই তাকে এ সাফল্য এনে দিয়েছে। ভবিষ্যতে সে আরও সাফল্য অর্জন করবে বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।

ঘাটাইল উপজেলা প্রশাসন শুক্রবার তানিশাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু সাঈদ তানিশাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।