ফরিদপুরে নাশকতার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতাও আসামি

ফরিদপুর জেলার মানচিত্র

ফরিদপুরের সালথায় ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে আসামি করা হয়েছে। সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পরিমল কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে গত রোববার থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ওই নেতাকে ১২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম শাহীদুজ্জামান (৪৫)। তিনি উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

মামলায় আসামি করার ঘটনায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল থেকে আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে জড়িত নয়, এমন প্রমাণ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

থানা-পুলিশের ভাষ্যমতে, গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরের বাইপাস সড়কের চৌরাস্তার মোড়ে বিএনপির ডাকা হরতালের সমর্থনে মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় পুলিশের ছয় সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের ১১টি ফাঁকা গুলি ছোড়ার পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে সেখান থেকে দেশি অস্ত্র জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করে পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এসআই পরিমল কুমার বিশ্বাস একটি মামলা করেন।

মামলার এজাহারভুক্ত ১৮ আসামির মধ্যে ১৭ জনই উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মী। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান (৫০), সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী এমদাদ আলী (৪৮), সোনাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল শেখ (৩৫), বিএনপির কর্মী সোহেল শেখ (২৮) অন্যতম। আসামিদের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহীদুজ্জামান।

প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শাহীদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী আর করব। এ ঘটনায় আমার কী বলার থাকে! আসামি হিসেবে আমার নাম দেখে বিস্মিত হয়েছি। এ নিয়ে আমি এসআই পরিমল কুমার বিশ্বাসকে ফোন করেছিলাম। তিনি (পরিমল) জানিয়েছেন, “ভুল হয়ে গেছে।”’ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, মামলার আসামির তালিকায় শহীদুজ্জামানের নাম কীভাবে এল, থানা কর্তৃপক্ষই ভালো জানেন। এর বাইরে তাঁর কিছুই বলার নেই।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুজনকে আটক করে। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যাঁরা ঘটনায় জড়িত, তাঁদের নাম সংগ্রহ করে মামলাটি করা হয়েছে। মামলার তদন্তের সময় যদি কেউ জড়িত না প্রমাণিত হয়, তাহলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।