কসবায় নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে দুই প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন, আবার ভোট গ্রহণের দাবি

সংবাদ সম্মেলন করে ৮৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৮টি কেন্দ্রে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ করা হয়েছে। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে কসবা শহরে মো. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়ার বাড়িতেছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আবার ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেন। আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে কসবা শহরে রাশেদুল কাওসারের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ দাবি জানান। কসবার ৩৮টি কেন্দ্রে বিভিন্ন অনিয়ম ও এজেন্টদের বের করে দিয়ে নির্বাচনী কাজে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনি আইনমন্ত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)।

সংবাদ সম্মেলনে রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া বলেন, ‘মঙ্গলবার দিনব্যাপী একটি প্রহসনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে আমার কর্মী-সমর্থক ও এজেন্টদের ৩৮টি কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ৮৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৮টি কেন্দ্রে ব্যাপক ভোট কারচুপি হয়েছে। ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানালে ব্যবস্থা নিচ্ছি ও নেওয়া হচ্ছে বলে কালক্ষেপণ করা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, সেই কেন্দ্রগুলোতে আমি পাস করেছি। প্রহসনের এ নির্বাচন আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি করছি।’

রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া বলেন, এ নির্বাচনে হাজারখানেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহত হয়ে তাঁর এক কর্মী এমদাদুল হক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। বর্তমানে তিনি ও তাঁর নেতা-কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফাহিম নামের তাঁর এক কর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় তিনি প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করে নির্বাচন বাতিল করে আবার ভোট গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন বলেন, যেসব কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, সেই কেন্দ্রগুলোতে তাঁরা পাস করেছেন। ৩৮টি কেন্দ্রে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। এসব কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত করে আবার ভোট গ্রহণের দাবি করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. এমরান উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আফজাল হোসেন ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল অনুষ্ঠিত কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে ৮৫ হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ছাইদুর রহমান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৭ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬ হাজার ৫৫৬ ভোট পেয়ে চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মো. শফিকুল ইসলাম। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মনির হোসেন তালা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ১৯১ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহারিয়ার মুক্তার বলেন, জাল ভোট দেওয়া ও চেষ্টা করার অপরাধে বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যেখানে কোনো সমস্যার খবর পাওয়া গেছে, সেখানেই ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা নিয়েছে।