প্রবাসী ভাইকে ফাঁকি দিতে মহাফেজখানায় দলিল ঘষামাজার অভিযোগ, দুজনকে নোটিশ
বড় ভাই আহমেদ সাদাত কামাল থাকেন অস্ট্রেলিয়া। ছোট ভাই আহমেদ ওয়াসিফ কামাল ঝিনাইদহে আইন পেশায় নিয়োজিত। আইনজীবী বাবা আহমেদ মাসুদ কামাল মৃত্যুর আগে দুই ভাইয়ের নামে বিপণিবিতানসহ ৮৫ শতক জমি লিখে দিয়ে যান বলে দাবি সাদাত কামালের। কিন্তু এই জমি থেকে বঞ্চিত করতে ছোট ভাই ওয়াসিফ কামাল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগসাজশে মহাফেজখানায় রাখা দলিল ঘষামাজা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রবাসী সাদাত কামালের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহাফেজখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাক হোসেন একজন দলিল লেখক ও একজন নকলনবিশকে ৩ জুন কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন। নকলনবিশ বাবুল আক্তার ও দলিল লেখক মো. আল মামুন এ ঘটনায় জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আহমেদ সাদাত কামাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুই ভাই এক বোন। তাঁদের বাবা ঝিনাইদহে আইন পেশায় ছিলেন। আইনজীবী হিসেবে তাঁর যথেষ্ট সুনামও রয়েছে। তিনি ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট মারা যান। সাদাত কামাল জানান, তাঁদের গ্রামের বাড়ি হাটফাজিলপুর বাজারে। এই বাড়ির সঙ্গে তাঁদের একটি বিপণিবিতান রয়েছে। যেটা ৮৫ শতক জমির এক প্রান্তে রয়েছে। বাবার মৃত্যুর আগে ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রামের বাজারের ওই বিপণিবিতানসহ জমিটি তাঁদের দুই ভাইয়ের নামে কবলা দলিল মূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। বিষয়টি তাঁর বাবা দুই ভাইকে জানিয়ে গিয়েছিলেন।
সাদাত কামাল আরও বলেন, বাবার রেখে যাওয়া অন্যান্য জমি ভাগাভাগি করতে গেলে ছোট ভাই ওয়াসিফ কামাল দাবি করেন, বিপণিবিতানসহ জমি বড় ভাই সাদাত কামালের নেই। বাবা ছোট ছেলে ও মেয়ে দিশা কামালের নামে দিয়ে গেছেন। এটি জানার পর সাদাত কামাল বিভিন্ন ব্যক্তির সহযোগিতায় নিশ্চিত হন দলিল ঘষামাজা করা হয়েছে। এই খবর নিশ্চিত হয়ে তিনি মহাফেজখানায় একটি অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে দিশা কামাল বলেন, তিনি এই সব বিষয়ে কিছুই জানেন না। বড় ভাই অভিযোগ করার পর বিষয়টি বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে জানতে পেরেছেন। দলিল ঘষামাজা হয়েছে কি না, এটা তাঁর জানা নেই।
সাদাত কামাল বলেন, ওয়াসিফ কামাল একজন দলিল লেখক ও একজন নকলনবিশের যোগসাজশে মহাফেজখানায় থাকা দলিল বের করে ঘষামাজা করে তাঁর নামের স্থলে বোনের নাম বসিয়েছেন। তিনি এই অপরাধের বিচার দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী আহমেদ ওয়াসিফ কামাল বলেন, বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। যে কারণে এ বিষয়ে তিনি বেশি কিছু বলতে চাচ্ছেন না।
সদর মহাফেজখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাক হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ায় এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দলিল লেখক মো. আল মামুন ও নকলনবিশ মো. বাবুল আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্তা নেওয়া হবে।