সিলেটে নৌকার প্রার্থীর মতবিনিময় সভায় এলেন মনোনয়নবঞ্চিত পাঁচ নেতা

সিলেট নগরের ধোপাদীঘির পাড় এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আজ শুক্রবার বিকেলে মতবিনিময় সভা হয়
ছবি: প্রথম আলো

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের আয়োজনে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সমর্থনে মতবিনিময় সভা হয়েছে। সভায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে সিলেট নগরের ধোপাদীঘির পাড় এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওই মতবিনিময় সভা হয়। সভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত ৫ নেতা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের আরও ১০ নেতা মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সভায় তাঁরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এবং জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ ও আবদুল খালিক, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম এ হাসান জেবুল ও আজাদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ ও ছালেহ আহমদ, সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মাহি উদ্দিন আহমদ। তাঁদের মধ্যে সভায় আসাদ উদ্দিন আহমদ, আবদুল খালিক, আরমান আহমদ, ছালেহ আহমদ ও মো. মাহি উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বড় ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া হয়।

সভাটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিজেই সঞ্চালনা করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, সিলেট-৩ আসনের সাংসদ হাবিবুর রহমান।

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পরিচয় করাতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আনোয়ারুজ্জামানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। গভীর এবং সুসম্পর্ক আছে। তিনি মেয়র হলে বরাদ্দ বাড়বে। তাঁর সবচেয়ে বড় ক্যারেক্টার হলো, তিনি সবাইকে সাহায্য করেন। দলের লোকদের সাহায্যের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে যাওয়া সব বাংলাদেশিকেই তিনি সাহায্য করেন।

অন্য অতিথিরা বক্তব্যে বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন অন্যান্য সিটি করপোরেশনের সমতুল্য বরাদ্দ পেলেও অনেক পিছিয়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক অর্থমন্ত্রী সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র দলীয় না হলেও সিলেটের স্বার্থে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছেন।  

বক্তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সিলেটের ছয়টি আসনের প্রতিটিতে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে সবাইকে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন চেয়েও না পাওয়া সবার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করছেন এবং করবেন। তাঁদের সবার সহযোগিতা নেবেন এবং পরামর্শ নেবেন। তাঁরা সবাই তাঁর পক্ষে কাজ করার কথা জানিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তিনি তাঁর কোনো ভুলভ্রান্তি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দলীয় প্রার্থী হওয়ায় তাঁর কোনো মতামত নেই। দলের নেতারা যা বলবেন, তিনি তার সবকিছু মেনে চলবেন।

আনোয়ারুজ্জামান বলেন, সিলেটের মানুষের উন্নয়ন ও মঙ্গল হয়, এমন কাজ করবেন। ভবিষ্যতে বিজয়ী হলে সবার পরামর্শ ও উপদেশ নিয়ে সিলেটকে স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন। তাঁকে যখন যেখানেই ডাকবেন, তিনি সাড়া দেবেন বলে জানান। তিনি যত দিন বেঁচে থাকবেন, নির্বাচিত হলেও বা না হলেও সিলেট শহরে থাকবেন বলে মন্তব্য করেন।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান গত ২২ জানুয়ারি দেশে ফিরে সিটি নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। পরবর্তী সময়ে তিনি দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ১৫ এপ্রিল দলীয় মনোনয়ন বোর্ড তাঁকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। এরপর ১৭ এপ্রিল তিনি ঢাকা থেকে সিলেটে ফেরেন।