মাত্র সাড়ে আট কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিয়েই মহেশখালী দ্বীপ থেকে যাওয়া যায় কক্সবাজার জেলা শহরে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় এখন শত কিলোমিটার সড়কপথ ঘুরে জেলা শহরে যেতে হচ্ছে মহেশখালীর বাসিন্দাদের।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে সব ধরনের নৌ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। নৌপথে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়াতে এই নির্দেশনা দেয় মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন। এর পর থেকে নৌপথটিতে সি-ট্রাক, কাঠের নৌকা, স্পিডবোটসহ সব ধরনের নৌযানের চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মহেশখালীর বাসিন্দাদের বেশির ভাগই জেলা শহরে নিয়মিত যাওয়া-আসা করেন নৌপথে। তবে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়লে জরুরি প্রয়োজনে বদরখালী-চকরিয়া হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে জেলা শহরে যান। এই পথটিতে যেতে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়।
গতকাল বিকেলে মহেশখালীর বিআইডব্লিউটিএর জেটিতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক শ যাত্রী কক্সবাজার শহরে যাওয়ার জন্য ঘাটে অপেক্ষা করছেন। অনেকেই নৌযান চলাচল বন্ধের বিষয়টি না জেনে ঘাটে এসেছেন। সেখানে কথা হয় কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার বিকেলে মহেশখালীতে তাঁর মামার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এখন কক্সবাজারে ফিরতে গিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় আটকা পড়েছেন। নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে বাড়িতে ফিরতেই হবে। এখন সড়কপথে যাওয়া ছাড়া আর উপায় দেখছি না। ১০০ কিলোমিটার পথ ঘুরেই যেতে হবে। খরচ-দুর্ভোগ দুটিই বাড়বে। তবু কী আর করা।’
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেদায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকা পর্যন্ত নৌ চলাচল বন্ধের নির্দেশনা জারি থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবার নৌযান চলাচল শুরু হবে।’
মহেশখালীর যাত্রীদের জন্য স্পিডবোট ও কাঠের নৌকার পাশাপাশি গত ২৪ এপ্রিল থেকে সি-ট্রাক চলাচল শুরু হয়। বিআইডব্লিউটিএ সি-ট্রাক সার্ভিস পরিচালনা করে আসছে। এই নৌপথে চলাচলকারী সি-ট্রাকটির ধারণক্ষমতা ২৫০ জন।
বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে মহেশখালীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে সি-ট্রাকটি। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবারও সি-ট্রাক যাত্রী পারাপার করবে।’